সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ‘চট্টগ্রাম গণহত্যার ৩৪ বছর পর ফাঁসির রায়’
‘চট্টগ্রাম গণহত্যার ৩৪ বছর পর ফাঁসির রায়’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম গণহত্যা উপনিবেশিক আমলের জ্বালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার কথা মনে করিয়ে দেয়। ঐ গণহত্যার ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিট্রিশ সরকারের দেয়া নাইট উপাধি প্রত্যাখান করেছিলেন। চট্টগ্রাম গণহত্যার পর ২৪টি মূল্যবান প্রাণহানি হলেও নানাভাবে বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হয়েছে। এটা আমাদের কাছে লজ্জা ও ঘৃণার বিষয়। আজ ৩৪ বছর পর চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং দোষীদের ফাঁসির রায় রয়েছে।
তিনি আজ সকালে পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন আদালত ভবনের পাদদেশে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি গণহত্যাার শহীদদের স্মরণ বেদীতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী, উপদেষ্টা আলহাজ সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ শফিকুল ইসলাম ফারুক, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, শ্রম সম্পাদক আব্দুল আহাদ, নির্বাহী সদস্য বখতিয়ার উদ্দীন খান, মহব্বত আলী খান, আলহাজ পেয়ার মোহাম্মদ, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, হাজী মো. বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের হাজী সিদ্দিক আলম, সাহাবউদ্দীন আহমেদ, আনছারুল হক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আবসার উদ্দিন চৌধুরী, আসিফ খান, আশরাফুল আলম প্রমুখ।
মাহতাব আরো বলেন, বাংলাদেশে যারা হত্যা, নাশকতা, সন্ত্রাস ও মৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় ও ইন্ধন দেয় তারা জাতির দুশমন। এরা আমাদের আশেপাশেই আছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার রূপকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে সামরিক স্বৈর-সরকারের প্ররোচনায় পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে ২৪ নেতাকর্মীকে হত্যা করে। এই গণহত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। আজ ৩৪ বছর পর বিলম্বিত বিচারে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হওয়ায় শহীদদের আত্মা ও তাদের পরিবারদের মাঝে শান্তি ও স্বস্তি নেমে এসেছে। এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হতে পারতো। কিন্তু সামরিক স্বৈর-সরকার এবং বেগম জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ক্ষমতাসীন থাকার সময় উদ্দেশে প্রণোদিতভাবে চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে চেয়েছিল।
আমরা জানি সামরিক স্বৈরাচার ও বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে এদেশে কলঙ্কিত গণত্যাগুলো সংঘটিত হয়। তাদের প্ররোচনায় এদেশে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটে। তাদেরকে ব্যবহার করে ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট তারেক জিয়ার হাওয়া ভবন থেকে গাইডলাইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়। সেদিন শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ২৬ নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। কয়েকশ’ নেতাকর্মী গ্রেনেডের স্পিন্টার বিদ্ধ হয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রবণশক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ধরনের নারকীয় অনেকগুলো ঘটনা বিচার প্রক্রিয়া অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও শেখ হাসিনা বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন এবং যুদ্ধাপরাধীসহ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছেন। এ ধরনের আরো অনেক নারকীয় হত্যাকা-ের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার পর তা কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আমি এসব নারকীয় ঘটনার দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাই।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং দেশকে বিপন্ন করে পিছনের দরজার দিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছে, হচ্ছে এবং হবেই। যতদিন পর্যন্ত অপশক্তিকে রাজনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে আমরা নির্মূল করতে না পারব ততদিন পর্যন্ত আশঙ্কা থেকেই যাবে। এ আশঙ্কা দূর করার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকতে হবে।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার শুরুতে শহীদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন ও সভাশেষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতবৃন্দ ২৪ জানুয়ারির শহীদদের স্মরণ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
চকবাজার থানা আওয়ামী লীগ : ২৪ জানুয়ারি গণহত্যা দিবস উপলক্ষে চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংকস্থ কোর্ট বিল্ডিং চত্বরে শহীদ বেধিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগরে প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. আনসারুল হক, সহ-সভাপতি শখে হারুনর রশীদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলহাজ জাফর আহম্মদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম ভূইয়া রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক রতন ভট্টাচার্য, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুজাউদ্দৌলা চৌধুরী বাবুল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. ইলিয়াস, উপ-দপ্তর সম্পাদক আবু জাফর মো. ফজলুল রহিম প্রমুখ।
উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ : ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে ২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহীদ বেধিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, ২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ খান, কাউন্সিলর আব্দুস সালাম মাসুম, মহিলা কাউন্সিলর নীলু নাগ, আঞ্জুমান আরা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির রুকন, ২৪ জানুয়ারি ১৯৮৮ সালের হত্যাকান্ডের বাদী মরহুম এড. শহীদুল হুদার সুযোগ্য সন্তান ২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী আওয়ামী লীগ নেতা এড. এরশাদ হোসেন প্রমুখ।