মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » অভিজিতের ঘাতকদের তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার ঘোষণা ইতিবাচক
অভিজিতের ঘাতকদের তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার ঘোষণা ইতিবাচক
ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যায় দণ্ডিত পলাতক দুই ঘাতক সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) ও আকরাম হোসেনসহ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি বাংলাদেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবাসন’ বিষয়ক এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, ‘আমেরিকানরা এভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে সাফল্য পেয়েছে। অনেক দেশে যাদের পাওয়া যায় না তখন তারা এভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে। আমি শুনেছি, বিন লাদেনকেও ধরার ক্ষেত্রে এভাবে হয়েছিল। এ কৌশল অনেক সময় সাকসেসফুল হয়। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন। আমি কেইসটা পুরোপুরি ফলো করিনি। শুনেছি দু’জনের শাস্তি হয়েছে। দুইজন পলাতক আছে। কোথায় কোন দেশে আছে আমরা জানি না। আমাদের তাদের যে ধরার চেষ্টা, এটা তাদের ধরার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।’
ওদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, জাজমেন্ট হয়েছে; তারপরও ওরা পালিয়ে গেছে। এখনও যদি পুরস্কার ঘোষণার কারণে তাদের ধরা সম্ভব হয়, আমরা এটাকে স্বাগত জানাচ্ছি, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তিন খুনির অবস্থান সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট বার্তা নেই বাংলাদেশ সরকারের কাছে। এই তিন খুনিকে ধরার জন্য বাংলাদেশ সরকারও পুরস্কার ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘আমরাও বঙ্গবন্ধুর তিন খুনি, যাদের অবস্থান জানি না তারা কোথায় আছেন; তাদের ধরার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছি। কেউ যদি ওদের সঠিক তথ্য দিতে পারেন অবশ্যই সরকার তাদের পুরস্কার দেবে। তারাও (যুক্তরাষ্ট্রও) এ রকম দিয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমন বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু লোকজন আছেন যারা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, বিশেষ করে ওখানকার আইজীবীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। মিথ্যা ভিডিও বানাচ্ছেন। ওখানে কিছু লোক আছেন, দেশেও কিছু লোক আছেন। যারা দেশের উন্নয়নে খুব সন্তুষ্ট না।’
একদল লোক আওয়ামী লীগ এত ভালো করে ফেলছে কেন, দেশের মানুষ ভালো থাকবে কেন? সবসময় আমরা পরনির্ভরশীল থাকব। বাংলাদেশতো নিজের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। এরা এটা পছন্দ করেন না। অনেকে মিথ্যা তথ্য দেন, বলেন মোমেন।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে, সেখানে সরকারের কিছু কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে কেউ মরলে বিচারবর্হিভূত হত্যা আর আমেরিকায় মরলে লাইন অব ডিউটিতে মারা গেছে। আর আমাদের দেশে একজন মারা গেলেই গণমাধ্যম সঙ্গে সঙ্গে বড় হরফে লেখে, বিনা বিচারে হত্যা। সব দেশে অনেক লোক পালিয়ে থাকে, পরে ধরাও পড়ে। এটা কোনো বিগ ডিল নয়, আপনার দেশের একজন পালিয়ে গেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এসব কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ চাপ অনুভব করছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘তারা তাদের নিয়মে চলছে। কিন্তু সরকারিভাবে আমাদের ওপর বিশেষ কিছু করেনি। তারা তাদের কাজ করছে। আমরা আমাদের কাজ করছি। কোনো দেশ উন্নত হতে থাকলে তার শত্রুও বাড়ে, চাপও বাড়ে।’
ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মেজর জিয়া ও আকরামকে ধরতে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ তথ্য জানিয়ে প্রকাশ করা একটি পোস্টারে বলা হয়, ‘২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় একটি বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসার সময় আল-কায়েদা ভিত্তিক সন্ত্রাসীরা মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়কে হত্যা এবং তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদকে আহত করে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ওই হামলায় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের একটি আদালতে ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়েছে। ওই আসামিদের মধ্যে দুজন- সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) ও আকরাম হোসেন-এর অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিল এবং তারা এখনো পলাতক রয়েছেন।’