শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | নারায়ণগঞ্জ | শিরোনাম | সিদ্ধিরগঞ্জ » প্রেমিককে পেতে রোগী সেজে হাসপাতালে প্রেমিকা, অতঃপর…
প্রেমিককে পেতে রোগী সেজে হাসপাতালে প্রেমিকা, অতঃপর…
নারায়ণগঞ্জে ভালোবাসার নতুন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক তরুণী। অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ায় প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য অসুস্থতার মিথ্যা অভিনয় করে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। অবশেষে জয় তারই হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতে হাসপাতালেই বিয়ে সম্পন্ন হয় প্রেমিক যুগলের।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন শিমরাইল এলাকায় ‘মা মেডিকেল’ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং এলাকার মো. ইউসুফের মেয়ে খাদিজা (১৮) বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার মা-বাবা। তখন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহফুজ রোগী খাদিজাকে দেখে সন্দেহ করেন। তিনি বুঝতে পারেন খাদিজা অসুস্থতার ভান করছে। তখন তিনি রোগীর বাবা-মাকে চেম্বার থেকে বাইরে অপেক্ষা করতে পাঠিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন। নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসার এক পর্যায়ে তরুণী স্বীকার করেন ওয়ালীউল্লাহ নামে এক যুবককে তিনি ভালোবাসেন। তবে তার অভিভাবকরা অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেছেন। কিন্তু এ বিয়ে তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই প্রেমিককে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে তাকে এই অসুস্থতার মিথ্যা অভিনয় করতে হয়েছে।
তবে তরুণীর কথা শোনার পর তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টি নিশ্চিত হতে ওই চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে হার্টের কয়েকটি পরীক্ষা করান। পরে রিপোর্টে সবকিছু স্বাভাবিক এলে তিনি নিশ্চিত হন ওই তরুণী অসুস্থ ছিলেন না।
পরে ডা. মাহফুজ খাদিজার প্রেমিককে ফোন করে তার প্রেমিকার শারীরিক অবস্থা অনেক খারাপ জানিয়ে তাকে হাসপাতালে আসতে বলেন। প্রেমিকার অসুস্থতার এমন খবর পেয়ে ওই যুবক তাৎক্ষণিক ছুটে এলে তরুণীর বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। কিন্তু খাদিজাও তার প্রেমিককেই বিয়ে করবেন এমন অনড় সিদ্ধান্তের কথা তার বাবা-মাকে ব্যক্ত করেন। এক পর্যায়ে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিকিৎসক পরামর্শ দিলে তরুণীর অভিভাবকরা নমনীয় হন এবং সেখানেই বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
পরবর্তীতে হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্স এবং স্টাফদের সহযোগিতায় ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ওই প্রেমিক-প্রেমিকার বিয়ে সম্পন্ন হয়। চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এই প্রেমিক-যুগল দু’জনই গার্মেন্টস-কর্মী। একই প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগদান করে দুইজনের মধ্যে পরিচয় ও পরবর্তীতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে স্বজনরা জানান।
বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের অভ্যর্থনা বিভাগের দায়িত্বে থাকা স্টাফ মো. সোহাগ বলেন, বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে তাদের বিয়ে হয়েছে। পরে পাত্র-পাত্রীসহ দুই পরিবারের লোকজন মিষ্টি খাইয়ে হাসিখুশি ভাবেই হাসপাতাল থেকে বিদায় নেন। যাবার আগে ওই তরুণী চিকিৎসক মাহফুজসহ হাসপাতালে কর্মরত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দোয়া চান।