মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » বাংলাদেশ-নেপাল পিটিএ চূড়ান্ত পর্যায়ে: বাণিজ্য সচিব
বাংলাদেশ-নেপাল পিটিএ চূড়ান্ত পর্যায়ে: বাণিজ্য সচিব
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ‘বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভবনা’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
দ্য কনফেডারেশন অব নেপালিজ ইন্ডাস্ট্রিজের (সিএনআই) সভাপতি বিষ্ণু কুমার আগারওয়ালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফররত ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সম্মানে এ সংলাপের আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)। এ সময় সিএনআই এবং ডিসিসিআই’র মধ্যে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বাণিজ্য সচিব বলেছেন, ‘২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশ ও নেপালের। এ অবস্থায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে পিটিএ স্বাক্ষরের বিষয়টি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। নেপাল সরকারের অনুমোদন পেলে শিগগির তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করা হবে।’
বাণিজ্য সচিব জানান, বাংলাদেশের ভোক্তা বেশি। ভোগ্যপণ্য উৎপাদন খাতে নেপালের উদ্যোক্তারা এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন।
তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তির ফলে দুই দেশের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে।
প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭৩.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৪.৮১ এবং ৬৮.৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।’
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাটপণ্য, হালকা প্রকৌশল প্রভৃতি খাত বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে নেপালের প্রতিনিধিদলকে এসব খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
সিএনআই’র সভাপতি বিষ্ণু কুমার আগারওয়াল জানান, নেপাল সেবা খাতনির্ভর অর্থনীতি থেকে উৎপাদন খাতনির্ভর অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, অবকাঠামো, ম্যানুফেকচারিং, তথ্য-প্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে নেপালে বিনিয়োগের আহ্বান জানান বিষ্ণু কুমার আগারওয়াল। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে তিনি ঢাকা চেম্বার থেকে নেপালে প্রতিনিধিদল পাঠানোর আহ্বান জানান।
সিএনআই’র সহ-সভাপতি নির্ভানা চৌধুরী জানান, তার প্রতিষ্ঠান ‘চৌধুরী গ্রুপ’ ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য খাতে বিনিয়োগ করেছে। তিনি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে উৎকৃষ্ট গন্তব্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপাল দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স কুমার রায় বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে আছে।’ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে তিনি দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সমুদ্র অর্থনীতি এবং হাইটেক শিল্প উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক, উল্লেখ করে কুমার রায় বলেন, ‘বাংলাদেশ শিগগির এ পরিকল্পনার সুফল ভোগ করবে।’
সংলাপে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন। এ সময় ডিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সফরকালে নেপালি প্রতিনিধিদলটি মন্ত্রী, সচিব এবং বাণিজ্য সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।