শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » অতিথি পাখির কলতানে মুখর জাবি ক্যাম্পাস
অতিথি পাখির কলতানে মুখর জাবি ক্যাম্পাস
সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভিড় করেছে হিমালয়ের দেশ থেকে আসা বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে পাখির জলকেলি মুগ্ধ করে সৌন্দর্যপ্রেমীর হৃদয়। প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছেন এ বিদ্যাপীঠে। তবে এ বছর অতিথি পাখির সংখ্যা অনেক কম।
শহুরে প্রকৃতিতে ষড়ঋতুর ঠাঁই না মিললেও ঢাকার অদূরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিটি ঋতু আসে প্রকৃতিতে বর্ণিল রূপে। এই যেমন শীত এলেই ঝরাপাতার মর্মরে শব্দে ঘুমিয়ে পড়ে প্রকৃতি। আর জাহাঙ্গীরনগর তখন জেগে ওঠে নতুন করে, অতিথি পাখির গানে।
শীতের সকালে পাখির কাকলিতে আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে ওঠে মিষ্টি রোদে শিশির ভেজা ঘাসে পথ চলা। সবুজে মোড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বছর শীতের চিরচেনা রূপ।
সুদূর সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অতিথি পাখি প্রকৃতিকে করে তোলে প্রাণবন্ত। পাখির কলরব প্রকৃতিতে এনে দেয় এক চঞ্চলতার শিহরণ। স্নিগ্ধ রোদেলা সকালে দর্শনার্থীদের পদভারে মুখর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
দীঘির জলে রৌদ্রস্নান শেষে নীল আকাশে ডানা মেলে দেশি মাছরাঙা, ডাহুক, পানকৌড়ির সঙ্গে অতিথি সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিড়িয়া, লালমুড়ি, বামুনিয়া হাঁস, মুরহেন, খঞ্জনাসহ নানা প্রজাতির অতিথি পাখি।
ছোট বড় মিলিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে লেকের সংখ্যা ২৬টি। অন্যান্য বছরগুলোতে প্রায় সবকটি লেকে পাখির দেখা মিললেও এ বছর অতিথি পাখির আগমন হয়েছে মাত্র একটি জায়গায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, খাদ্য ও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পাখিরা এখানে আসে। আমরা যদি এটা নিশ্চিত করতে না পারি খুব স্বাভাবিকভাবে পাখি আসবে না এবং আসলেও থাকবে না। দুঃখজনকভাবে সেটিই হচ্ছে। কারণ আমাদের এখানে খাবারের জন্য পাখিরা আসে। অথচ লেকগুলোর দীর্ঘদিন যাবত ওইভাবে সংস্কার করা হচ্ছে না। করলেও সময়টা সঠিক হচ্ছে না। এ জন্য কর্তৃপক্ষের আরেকটু উদ্যোগী হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন বলেন, লোকজন থেকে বাঁচার জন্যই তো পাখিরা এখানে আসে, শীত থেকে এবং লোকজনের কোলাহল থেকে বাঁচার জন্য। যখন কোলাহল বেড়ে যায় তখন পাখিরা থাকতে পারে না। এবারে কিন্তু শীতের শুরুতে বলা যেতে পারে আমি তো দেখেছি শীত পড়ার আগেই প্রচুর পাখি এসেছিল। আমাদের দুটো লেকেই অনেকগুলো পাখি ছিল। কিন্তু যেই মানুষের ভিড় শুরু হলো, ফ্লাশ মারা, ছবি তোলা শুরু হলো পাখিগুলো চলে গেছে বা যাই আছে এর মধ্যেই আছে।
অতিথি পাখির এ অভয়ারণ্য আগের মতোই মুখর থাকবে সব মানুষ এবং প্রকৃতিপ্রেমীর ভালোবাসায়- এই প্রত্যাশা সবার।