রবিবার, ২৯ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বৃটিশ ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের বিনিয়োগ আনার জন্য কাজ করছে দূতাবাস - বৃটিশ হাইকমিশনার
বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বৃটিশ ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের বিনিয়োগ আনার জন্য কাজ করছে দূতাবাস - বৃটিশ হাইকমিশনার
ঢাকায় নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেছেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের স্টার্টআপদের জন্য বৃটিশ ভেঞ্চার ক্যাপিটালিষ্টদের বিনিয়োগ প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এলক্ষ্যে বৃটিশ দূতাবাস কাজ করছে।
তিনি জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে ২য় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের সেবাখাতসমূহ বিশেষ করে ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য, তথ্য-প্রযুক্তি এবং শিক্ষা খাতে বৃটিশ বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
হাইকমিশনার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ‘ব্যবসা পরিচালনা সূচক’-এ বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়ন এবং এজন্য সরকার ও বেসরকারিখাতকে একযোগে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
রোববার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা: প্রেক্ষিত সেবা খাত’ বিষয়ক ভাচুর্য়াল সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রবার্ট ডিকসন করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির চলমান গতিধারা অব্যাহত রাখতে বেসরকারি বিনিয়োগ সম্প্রসারণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৭৫১ বিলিয়ন, যা বিগত অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। তিনি জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৩৭০ বিলিয়ন ডলার, এর মধ্যে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এসেছে সেবা খাতে।
তিনি বলেন, ব্রেক্সিট যুক্তরাজ্যের জন্য বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশের সেবাখাতসহ ব্যাংকিং,জ¦ালানী, অবকাঠামো,কেমিক্যাল, পর্যটন, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে বৃটিশ উদ্যোক্তারা অধিক হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশ ও বৃটেনের মধ্যকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়া পর্যন্ত ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে ৮টি আইটি পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ৪টির কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি জানান. বাংলাদেশের হাইটেক পার্কসমূহে ইতোমধ্যে ১৬০টি দেশি-বিদেশি কোম্পানী বিনিয়োগ করেছে, যেখানে ২১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশে প্রতিবছর ৩ দশমিক ৫ কোটি স্মার্ট নতুন মোবাইল ফোনের চাহিদা রয়েছে এবং স্থানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৭৫ লাখ হ্যান্ডসেট উৎপাদন করে থাকে।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন। বর্তমানে বাংলাদেশে বিশে^র ৮০টি দেশে নিজেদের উৎপাদিত তথ্য-প্রযুক্তি, সফটওয়্যার রপ্তানি করছে। স্থানীয় বাজারের পরিমাণ ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ প্রতিবছর ২২ হাজারের বেশি আইটি ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে থাকে এবং এ ধরনের মানবসম্পদ ব্যবহার করে বৃটিশ উদ্যোক্তারা তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।
এসবিকে টেক ভেঞ্চারস-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সনিয়া বশির কবীর বলেন, সারা পৃথিবীতেই করোনা মহামারী তথ্য-প্রযুক্তিখাতের উন্নয়নকে বেগবান করেছে, এখাতের অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন বৃটিশ উদ্যোক্তারা তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। পাশাপাশি তিনি দীর্ঘমেয়াদী ঋণ সহায়তা প্রদান ও সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান।
সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ সিমপ্রিন্টস টেকনোলোজি লিমিটেডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আসাদ-উর-রহমান নীল, জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেডের কো-ফাউন্ডার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদনান ইমরান, এমএফ এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির তানভীর আহমেদ, ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এন কে এ মবিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।