শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১
N2N Online TV
বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব উত্থাপন
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব উত্থাপন
১৫৯ বার পঠিত
বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব উত্থাপন

---

উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনার জন্য আজ জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের অঙ্গীকার হবে বাংলাদেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা, দমন-পীড়ন ও বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তর করে বিশ্ব মঞ্চে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ হবে সমৃদ্ধশালী একটি দেশ।’
একাদশ জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশনে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সংসদ নেতা।
দিনের অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ভাষণ দেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রস্তাবে বলেন, ‘সংসদের অভিমত এই যে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উদযাপন বাঙালীর জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সমগ্র বিশে^ বাংলাদেশ আজ ‘উন্নয়নের বিস্ময়’। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।’
এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা-সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর জাতির পিতা বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেন। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবার জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নকালে, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ জাতীয় জীবনে নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’
‘শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, সংবিধানকে সামরিক ফরমান দ্বারা ক্ষত-বিক্ষত করা হয়। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার চেতনাকে করা হয় ভূলুণ্ঠিত।’
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৮১ সালের ১৭ মে নির্বাসন শেষে আমি আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সভাপতি হয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করি। এরপর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, এদেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ আইনের শাসন ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করি। ফলে, পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় গণতন্ত্র।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়। বিচার করা হয় যুদ্ধাপরাধীদের। ২০২১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে স্বীকৃতি অর্জন করে। ২০০৮ সালের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা।’
এসময় আওয়ামী সরকারের কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গৃহহীন ৯ লাখ মানুষকে ঘর দেওয়া, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধসহ মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জিত হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রেমিট্যান্স, রিজার্ভ প্রতিটি সূচকে সাধিত হয়েছে অগ্রগতি।’
বিশ্ব অর্থনীতিতে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১তম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়ন করা হয়েছে। করোনা অতিমারির সংকট উত্তরণে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতির চালিকাশক্তি সচল রেখেছে। মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলী টানেলসহ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ বিশ্বে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।’
ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ ও মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বাংলাদেশের সফলতার জয়যাত্রা বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার সফল বাস্তবায়ন ও প্রত্যাশা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখছে জাতীয় সংসদ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণে তারুণ্যদীপ্ত বাংলাদেশ সব চ্যালেঞ্জ উত্তরণ ঘটিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, শোষণ-বৈষম্যহীন, উন্নত-সমৃদ্ধ ও জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে অধিষ্ঠিত হোক এটাই আমাদের প্রত্যয়।’

তাঁর নিজের আনা কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারার প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়া, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, জনগণের আয়ুস্কাল বৃদ্ধি সহ প্রতিটি সূচকে দেশকে তাঁর সরকার এগিয়ে রাখতে পেরেছে। কারণ পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং এর সফল বাস্তবায়নেই সরকারের সাফল্য এসেছে। যে কারণে দেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মাহেন্দ্রক্ষণেই তাঁর সরকার আজ দেশের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে পারছে। একে ধরে রেখেই দেশকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে দেশকে ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দেয়ায় তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, চতুর্থ শিল্প বিল্পবের জন্য আমাদের দেশের মানুষ যাতে যথাযথভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে সে ধরণের প্রশিক্ষণ এবং সেভাবে ডিভাইসগুলো গড়ে তোলার পদক্ষেপও সরকার নিয়েছে। “অর্থাৎ বাংলাদেশকে একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন একটি দেশ হিসেবে এবং বাঙালি জাতিকে এটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন উন্নত-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে স্বপ্নটা জাতির পিতা দেখেছিলেন, দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। ইনশাল্লাহ সেই সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারবো। আজকের প্রস্তাবে আমি সেই প্রত্যয়টাই ব্যক্ত করেছি”, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ রূপেই বাংলাদেশ সারাবিশ্বে আগামীতে মাথা উঁচু করে চলবে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরে ৮০ শতাংশ মানুষকে তিনি ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসার প্রত্যয়ের পুনরোল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কোটি মানুষ ভ্যাকসিন পেয়েছে। ভ্যাকসিনের কোনো অভাব হবে না। অনেক উন্নত দেশ বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেয় না বা টেস্ট করে না। তাঁর সরকার কিন্তু বিনা পয়সায় টেস্ট করাচ্ছে, ভ্যাকসিন দিচ্ছে। ধনী-দরিদ্র থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরা, সবাই এই ভ্যাকসিন পাচ্ছে। সবাই পাবে। ‘দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে আমরা ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসবো,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তাঁর সরকার ‘ক্ষমতাকে জনগণের সেবা করার সুযোগ’ হিসেবে দেখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। করোনা মহামারি না থাকলে এটাকে আমরা ১৭ ভাগে নামিয়ে আনতে পারতাম। করোনার কারণে কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়েছে। তারপরও উন্নয়নের চাকা কিন্তু আমাদের থেমে থাকেনি। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। ৪১টি অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমরা এভাবে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষিত রূপকল্প অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। পরিকল্পিতভাবে আমরা সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারছি বলেই এগিয়ে যাচ্ছে। জনগণ ভোট দিয়েছে বলে আমরা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পারছি। রজতজয়ন্তী উদযাপনের সময়ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল।
স্বাধীনতার পর জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে তাঁর কন্যা বলেন, আমরা প্রতীক্ষায় ছিলাম কখন আমাদের পিতা ঘরে আসবেন। কিন্তু আমরা বাবাকে পাই পরে। জনগণ পায় আগে (দেশে ফিরেই আগে রেসকোর্স ময়দানে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে সেখানে যার বঙ্গবন্ধু)। তার কাছে জনগণই ছিল সবচেয়ে বড়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আকাক্সক্ষা ছিল দেশটাকে গড়ে তুলবেন। বাংলাদেশকে সাজাবেন যেন প্রতিটি মানুষ সুবিধা পান। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। দেশের উন্নয়নে তিনি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করতে শুরু করেন। একটি প্রদেশ থেকে দেশে উন্নীত করার যতো আইন, নিয়ম নীতিমালা সবই তিনি করে দিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দীর্ঘদিন দেশ চালালেও প্রতিটি ক্ষেত্রে যখন কোনো কাজ করতে যান তখন সে কাজের ভিত্তি জাতির পিতা আগেই তৈরি করে দিয়ে গেছেন বলে এখনো দেখতে পান। তিনি বলেন, আমার কাছে বিস্ময় মনে হয়, এতো অল্প সময়ে কীভাবে এতো কাজ করে গেলেন তিনি। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্য হলো যখন তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলছিলেন, তখন কিছু লোক মনে হয় যেন একটি অস্থিরতায় ভুগছিলেন। এসময় নানান ধরনের কথা, নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের হত্যা করা সহ নানা ষড়যন্ত্র চলছিল। তিনি বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী সারেন্ডার করেছিল ঠিকই। কিন্তু তারা তাদের কিছু দালাল যুদ্ধাপরাধীদের রেখে যায়। তারাই দেশের ভেতরে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। এত অল্প সময়ে বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রাটা তাদের সহ্য হয়নি। দেশ স্বাধীন হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে, তা পাকিস্তানিদের দোসররা মেনে নিতে পারেনি। শেখ হাসিনা বলেন, একটি চক্র যে চক্রান্ত করছে, তা মোকাবিলা করেই জাতির পিতা দেশকে গড়ে তুলছিলেন। দেশ যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়, কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়। তার জন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দেন। ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দূর করতে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করেন। জেলা গভর্ণর করে সব মহকুমাগুলোকে জেলা ঘোষণা করে গভর্ণরদের আন্ডারে দিয়ে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করেন।
তিনি বলেন, আজ যে সম্মানজনক অবস্থানে আমরা আসতে পেরেছি, জাতির পিতা বেঁচে থাকলে সেই জায়গায় আমরা স্বাধীনতার ১০ বছরে পৌঁছে যেতে পারতাম। তিনি বলেন, নানা ধরনের অপপ্রচার করেও যখন জনগণের সহায়তা পেল না, তখনই পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়। তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে বার বার ক্যু, মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষকে হত্যা, সংবিধান ক্ষতবিক্ষত করা হয়। এর ফলাফল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমাদের ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করা হয়েছিল।
১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আমরা জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাই। আমরা চেয়েছি, দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার। তিনি বলেন, জনগণ আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে বার বার ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দিয়েছে। যার কারণে আজ আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে। ১২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
প্রস্তাবটি তোলার আগে প্রধানমন্ত্রী সংসদে ভাষণ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতির বক্তব্য সংসদের এ আলোচনাকে গৌরবান্বিত করেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই যে সংসদ, আমাদের স্বাধীনতার সুফল হচ্ছে এই সংসদ। জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন সেই সংবিধানের ভিত্তিতেই আমাদের নির্বাচন এবং আজকের এই সংসদ।
তিনি এ সময় শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনার প্রসংগ টেনে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যাতে আগামীতে সুন্দর জীবন পেতে পারে সেজন্যই আমাদের এই পরিকল্পনা এবং তাঁর সরকার দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষের ঘরে এখন বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্র্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে তাঁর সরকারের লক্ষ্য দেশের একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না। কাজেই সবার জন্য ঘর দেয়ার প্রকল্প তাঁর সরকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের পর তাঁর আলোচনার মাধ্যমে সংসদে বিশেষ আলোচনা পর্ব শুরু হয়। দুই দিনব্যাপী আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবার তা গ্রহণ করা হবে।



এ পাতার আরও খবর

দুই বাংলাদেশিকে হত্যার পর লাশ নিয়ে গেল বিএসএফ দুই বাংলাদেশিকে হত্যার পর লাশ নিয়ে গেল বিএসএফ
ঘরের ওপর বিদ্যুতের তার পড়ে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু ঘরের ওপর বিদ্যুতের তার পড়ে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু
সালাম মুর্শেদী অবৈধভাবে বাড়ী দখল করেননি, তদন্ত রিপোর্ট অসম্পূর্ণ ও অনুনোমোদিত সালাম মুর্শেদী অবৈধভাবে বাড়ী দখল করেননি, তদন্ত রিপোর্ট অসম্পূর্ণ ও অনুনোমোদিত
ক্যামেরুনকে ১-০ গোলে হারালো সুইজারল্যান্ড ক্যামেরুনকে ১-০ গোলে হারালো সুইজারল্যান্ড
তথ্যমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ তথ্যমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ
মুজিবনগর সরকারের স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার বাড়ি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ মুজিবনগর সরকারের স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার বাড়ি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের উপ-মন্ত্রীর বৈঠক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের উপ-মন্ত্রীর বৈঠক
বৈশ্বিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো যথেষ্ট নিরাপদ : প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো যথেষ্ট নিরাপদ : প্রধানমন্ত্রী
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সরাসরি নৌযোগাযোগের ওপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সরাসরি নৌযোগাযোগের ওপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
জঙ্গি ছিনতাই : রাফি ৭ দিনের রিমান্ডে জঙ্গি ছিনতাই : রাফি ৭ দিনের রিমান্ডে

আর্কাইভ