মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি ও বাণিজ্য | ছবি গ্যালারী | জাতীয় | শিরোনাম » ‘পান রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলতে কাজ চলছে’
‘পান রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলতে কাজ চলছে’
যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দেশে আধুনিক টেস্টিং ল্যাব স্থাপন, উন্নয়ন এবং কৃষিপণ্য রোগজীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সনদ (ফাইটোস্যানিটারি) প্রদানের বিষয়ে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হবে।
গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে দেশটির ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি (এফএসএ) ও সরকারি গবেষণাগারের কর্মকর্তা এবং লন্ডন সফররত কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে ইউকের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির চিফ সায়েন্টেফিক অ্যাডভাইজার অধ্যাপক রবিন মে ডেপুটি গভর্নমেন্ট কেমিস্ট সেলভারানি এলাহি, হেড অব ইইউ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি লিজ স্ট্রেটন, এফএসএর সায়েন্টেফিক স্যাম্পলিং ও ল্যাবরেটরি পলিসি লিডার ডেভিড ফ্রাঙ্কলিন উপস্থিত ছিলেন। ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি ও সরকারি গবেষণাগারের এক্সপার্টরা এ সময় সে দেশে ল্যাব স্থাপন, পরিচালনা, টেস্টিং মানদণ্ড, রেগুলেটরি চাহিদা প্রভৃতি বিষয় উপস্থাপন করেন।
কৃষিমন্ত্রী এ সময় বলেন, আমরা বিশ্বমানের আধুনিক ল্যাব স্থাপন ও গ্রহণযোগ্য সার্টিফিকেশন দেওয়ার জন্য কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা আমরা কাজে লাগাতে চাই। আমরা যুক্তরাজ্যের কারিগরি সহযোগিতা কামনা করি। আমাদের নিজস্ব অর্থেই এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এ সময় ইউকে প্রতিনিধিদল ল্যাব সিস্টেম উন্নয়নে ইউনিডো (UNIDO) থেকে অনুদান পাওয়া যেতে পারে বলে জানান, এবং ইউকে এআইডির চলমান ফান্ডিং সহায়তায় এ বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, এটিও তারা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ইউকের মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের বিষয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তার মধ্যে ল্যাব ও ফাইটোস্যানিটারি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম জানান।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পান রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও ইউকেতে তা এখনো বহাল রয়েছে। এ বিষয়ে ইউকের প্রতিনিধিদল জানায়, ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্টে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে বিল পাসের বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডে পান রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই।
প্রবাসী ব্যবসায়ীদের দেশের কৃষি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
একই দিন লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাসে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিবিসিসিআই) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কৃষিমন্ত্রী।
এ সময় ইউকে প্রবাসী ব্যবসায়ীদেরকে দেশের কৃষি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সে সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে প্রবাসী ব্যবসায়ীদেরকে বিনিয়োগ করতে হবে। দেশে বিনিয়োগের সব সুবিধা রয়েছে।
ব্যবসায়ী নেতারা বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য কার্গো বিমান ভাড়া বেশি, স্ক্যানিং সমস্যা, কার্গো ভিলেজে কোল্ড স্টোরেজের সমস্যাসহ নানা সমস্যা তুলে ধরেন। এ ছাড়া গ্লোবাল গ্যাপ (উত্তম কৃষিচর্চা) মেনে ফসল উৎপাদন, সংরক্ষণ ও সার্টিফিকেট প্রদানের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তাঁরা কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিদলের এ সফরের প্রশংসা করেন।
কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাসমূহ নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ব্যবসায়ীদেরকে অবহিত করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, রপ্তানি বৃদ্ধিতে আধুনিক কৃষি চর্চা মেনে ফসল উৎপাদন, রপ্তানি উপযোগী জাতের ব্যবহার, আধুনিক প্যাকিং হাউস নির্মাণ, অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব স্থাপনসহ নানান কাজ চলমান আছে। ইতোমধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে ২ লাখ ৫০ আলু রপ্তানি ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিপণ্যের রপ্তানি ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে ২টি খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বিবিসিসিআইর হেড অব এডভাইজরি বোর্ড শাহগীর বখত ফারুক, প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ, ডিরেক্টর রফিক হায়দার, পাথফাইন্ডারের সিইও ইফতি ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সফররত বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।