মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » বিশ্বকাপ বাছাই: ইতালির অপেক্ষা বাড়িয়ে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পেল সুইজারল্যান্ড
বিশ্বকাপ বাছাই: ইতালির অপেক্ষা বাড়িয়ে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পেল সুইজারল্যান্ড
নর্দান আয়ারল্যান্ডের সাথে গোলশূন্য ড্র করে বিশ্বকাপের মূল পর্বে সরাসরি খেলার আশা শেষ হয়ে গেছে ইতালির। গতকাল বেলফাস্টের উইন্সডর পার্কে স্বাগতিক নর্দান আয়ারল্যান্ডকে হারাতে পারলেই গ্রুপ-সি’র শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারতো আজ্জুরিরা, সেই সাথে কাতারে খেলাও নিশ্চিত হয়ে যেত। কিন্তু অনেকটাই সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করে হতাশ করেছে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
এই সুযোগে ইতালির সাথে সমান ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ম্যাচ শুরু করা সুইজারল্যান্ড শেষ ম্যাচে বুলগেরিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কাতারের টিকিট নিশ্চিত করেছে। ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩টি ড্রসহ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সুইসরা বাছাইপর্বে গ্রুপ-সি’র শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
রবার্তো মানচিনির দল গ্রুপের শীর্ষস্থানেই থেকেই কাল ম্যাচ শুরু করেছিল। এই ড্রয়ে আগামী মার্চে প্লে-অফ খেলতে বাধ্য হলো ইতালি। আগের আসরেও সুইডেনের কাছে প্লে-অফে পরাজিত হয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলতে ব্যর্থ হয়েছিল আজ্জুরিরা।
কাল ম্যাচ শেষে হতাশ মানচিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আসলে কিছুই বলার নেই, সবাই দেখেছে কি হয়েছে। আমরা গোল করতে ব্যর্থ হয়েছি। যদিও ম্যাচের নিয়ন্ত্রন আমাদের হাতেই ছিল। এটা সত্যিই লজ্জার বিষয়। এই ম্যাচের আগেই আমাদের গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করা উচিত ছিল।’
২০২০ ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপ জেতার পর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বেশ কিছু ব্যর্থতা সত্তেও কাতারের মূল পর্বে খেলার ব্যপাওে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব পোষন করেছেন মানটিনি। মার্চে বাছাইপর্বে ইতালি প্রথম তিনটি ম্যাচেই জয়ী হয়েছিল। কিন্তু তারপর চারটি ম্যাচে ড্র করে পয়েন্ট হারায়। মাঝে ছোট দল লিথুনিয়াকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল। কিন্তু সুইসদের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই পেনাল্টি মিস করে ড্র করতে বাধ্য হয়। এ সম্পর্কে মানচিনি বলেন, ‘গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচে আমরা দুটি পেনাল্টি মিস করেছি। এর অর্থ হচ্ছে নিয়ন্ত্রন আমাদের হাতেই ছিল। কিন্তু সুযোগগুলো কাজে না লাগিয়ে আমরা পুরো বিষয়টি কঠিন করে তুলেছি। খেলোয়াড়দের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। প্লে-অফে জেতার ব্যপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
বাছাইপর্বের শেষ দুটি ম্যাচে ইনজুরির কারনে মানচিনি দলে পাননি অধিনায়ক ও রক্ষনভাগের মূল ভরসা গিওর্গিও চিয়েলিনি, তারকা স্ট্রাইকার সিরো ইমোবিলে ও গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তিকে। সুইসদের বিপক্ষে শুক্রবার ড্র হওয়া ম্যাচটি থেকে দুটি পরিবর্তন করে কাল মূল একাদশ সাজিয়েছিলেন মানচিনি। আক্রমনভাগে শক্তি বাড়ানোর জন্য ডোমেনিকো বেরারদি ছাড়াও ম্যানুয়েল লোকাত্তেলির স্থানে মধ্যমাঠে নামিয়েছিলেন সান্দ্রো টোনালিকে। যদিও লোরেঞ্জো ইনসিগনেকে তার স্থান থেকে সড়িয়ে নতুন একটি ফর্মেশন তৈরীর পরিকল্পনা নর্দান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কাজে আসেনি। উইন্সডর পার্কের উচ্ছসিত সমর্থকদের সামনে আজ্জুরিরা কিছুটা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। আক্রমনভাগেও তেমন কোন ভাল সুযোগ তারা তৈরী করতে পারছিলনা। ১৭ ও ২৮ মিনিটে ইনসিগনের দূর্বল শট ও ফেডেরিকো চিয়েসার অফসাইডে দুটি ভাল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
বিরতির চার মিনিট পর ম্যাচের সবচেয়ে ভাল সুযোগটি পেয়েছিল নর্দান আয়ারল্যান্ড। জামাল লুইসের লো পুল-ব্যাক থেকে জর্জ সেভিয়ার দারুন এক লো শট কোনমতে রুখে দেন গিয়ানলুইগি ডোনারুমা।
ইতালির পয়েন্ট হারানোর দিনে সুইসদের এগিয়ে যাওয়া আরো সহজ হয়ে যায়। লজার্নে প্রথমার্ধ গোলশুন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে আর ফিরে তাকাতে হয়নি স্বাগতিক সুইজারল্যান্ডকে। নোহা ওকাফোরের হেডে বিরতির তিন মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যায় সুইসরা। ৫৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন রুবেন ভারগাস। মারিও গাভরানোভিচের গোল অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। ৭২ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় সেডরিক ইত্তেনের গোলে সুইজারল্যান্ডের জয় নিশ্চিত হয়। ইনজুরি টাইমে রেমো ফ্রয়লার বুলগেরিয়ার জালে আরো এক গোল দিলে বড় জয় নিয়েই কাতারের টিকিট হাতে পায় সুইসরা।