শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » সময় এসেছে তুরুনদের স্বপ্ন দেখার এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের- অর্থমন্ত্রী
সময় এসেছে তুরুনদের স্বপ্ন দেখার এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের- অর্থমন্ত্রী
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তরুনরা একদিন সফল এবং সার্থক মানুষ হিসাবে রুপান্তরিত হয়ে আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে প্রিয় মাতৃভূমিকে সারা বিশ্বে তুলে ধরবে। আজ সময় এসেছে তুরুনদের স্বপ্ন দেখার এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের। “বঙ্গবন্ধু ইননোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১” প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরাই একদিন গুগল, টেসলা, আমাজন এর মত বিশাল কোম্পানিতে পরিনত হবে, ইনশাআল্লাহ। মুজিব জন্মশতবর্ষে “বঙ্গবন্ধু ইননোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১” আয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে ৭ হাজারের অধিক উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও স্টার্টআপের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমান করে যে, বাংলাদেশ আজ আইসিটি খাতে সারা বিশ্বে একটি বিশ্বাসের জায়গা করে নিয়েছে। দেশি ও বিদেশি স্টার্টআপদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন উদ্ভাবন বা উদ্ভাবনী স্টার্টআপ খুজেঁ বের করতে, আইডিয়া প্রকল্প তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের নতুন উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করে দেশে একটি সঠিক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়তে নিশ্চয়ই বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এফসিএ, এমপি আজ রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও এ অবস্থিত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মাল্টিপারপাস অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত, তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের অনুপ্রাণিত করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (iDEA)” আয়োজিত “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১” গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ আব্দুল মান্নান, পিএএ । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যু্গ্মসচিব মো: আব্দুর রাকিব।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী আরো বলেন- ফেসবুক, উবার, এয়ার-বিএনবি, টুইটার, লিঙ্কড-ইন, টেসলা বা ড্রপবক্সের মতো আমেরিকান প্রধান প্রযুক্তি সংস্থাগুলি, তাদের কোনটিই ২০ বছর আগে ছিল না - এমনকি গুগল মাত্র ২১ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আজকের দিনে এই সমস্ত কোম্পানি মাত্র কয়েক বছরে শত শত বিলিয়ন, এমনকি ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ই-কমার্স জগতের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান শুধু অ্যামাজনই ঘন্টায় আড়াই মিলিয়ন ডলার নীট প্রফিট করে, যা সত্যি অবিশ্বাস্য। বিশ্বের বৃহত্তম মিডিয়া সংস্থা Facebook তাদের বেতনভুক্ত কোনও সাংবাদিক বা কন্টেন্ট নির্মাতা নেই। বিশ্বের বৃহত্তম হোটেল চেইন Air-bnb-এর কোনো হোটেল নেই। বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি কোম্পানি উবার, একটিও ট্যাক্সির মালিক নয়। এই প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সার্ভিস সেক্টরে বিপ্লব ঘটিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী অনেক কোম্পানির বাজার দখল করে নিয়েছে শুধু মাত্র তারুণ্যের বুদ্ধি-বৃত্তিক উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে। বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম এর যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ৫০০ টির বেশি স্টার্টআপ কাজ করছে এবং আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। দেশে বর্তমানে ৪০ টিরও বেশি এক্সেলেরেটর এবং ইনকিউবেটর প্রোগ্রাম তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু স্টার্টআপ দেশে প্রচুর বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। স্টার্টআপদের মাধ্যমে ১৫ লক্ষের বেশি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান এর সুযোগ তৈরি হয়েছে। “বিগ ২০২১” আয়োজন, এমন একটি উদ্যোগ যা স্টার্টআপ সংস্কৃতি গঠন ও উন্নয়নের বর্তমান সরকারের অঙ্গিকারের একটি সুস্পষ্ট প্রতিফলন। আশা করা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে আবির্ভূত হবে।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী তরুণ সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের তরুণরা আমাদের দেশের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের গর্বিত রক্তের উত্তোরাধিকার। তারা প্রতিভাবান এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ। আমাদের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। তাদের পক্ষেই সম্ভব সমস্যাকে সম্ভাবনায় পরিনত করা। বাংলাদেশের সামনে জনমিতিক লভ্যাংশের পূর্ণ সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তরুণদের মধ্যে সব ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগ বা স্টার্টআপ সৃষ্টিতে সহায়তার লক্ষ্যে আমরা আমাদের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরের বাজেটেও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। অচিরেই আইসিটি বিভাগ থেকে তরুন সমাজ স্টার্ট আপ গঠনে এই তহবিল সুবিধা লাভ করতে পারবে। যুবসমাজকে সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তরে সরকারের এ কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সকল প্রকার তথ্য-প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত হতে হবে এবং নিজেদেরকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের আজকের শিশু ও তরুণদেরকে আগামী দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশের যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য সন্তান জনাব সজীব ওয়াজেদের নির্দেশনায় এরই মাঝে সারা বাংলাদেশে ৮০০০ ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যেখানে আমাদের শিশু ও তরুণরা সকল প্রকার প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন।