শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » আমরা তো ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে পারি না
আমরা তো ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে পারি না
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সুফল পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, কমিউনিটি পুলিশের অনেক দায়িত্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা তো ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে পারি না।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অবস্থিত শহীদ শিরু মিয়া মিলনায়তনে কমিউনিটি পুলিশিং ডের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পুলিশ ধীরে ধীরে জনতার পুলিশ হয়ে উঠছে। করোনার প্রথম সময়ে আমরা দেখেছি, বাবা-মা মারা যাওয়ার পর ছেলে তাদের মরদেহ ভয়ে নিয়ে যাচ্ছে না দাফনের জন্য৷ কিন্তু পুলিশ সদস্যরা তখন এগিয়ে এসেছে। দায়িত্ব নিয়ে এসব মরদেহের দাফন সম্পন্ন করেছে। করোনায় ফ্রন্ট ফাইটার হিসেবে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু পুলিশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আজ পুলিশ ধীরে ধীরে সেই জায়গাটিতে যাচ্ছে। পুলিশ দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল বলেই দেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে তিনি বলেন, ৫০-৭০ বছর আগের চিত্র দেখলে দেখা যায় অভিযোগ করার একদিন পরে হয়ত গ্রামবাংলায় পুলিশ যেত। ঢাকা জেলার অনেক স্থানেও একই অবস্থা ছিল। তাহলে তখন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ হতো কীভাবে? তখন মাতব্বর, চেয়ারম্যান পুলিশের ভূমিকাটা পালন করত। পুলিশ গিয়েও তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিত। এসব মাতব্বর ও চেয়ারম্যানের কাছে গ্রাম অঞ্চলের সব খবর থাকত। পুলিশ তাদের কাছে গিয়ে সব খবর নিত। তাদের কাছ থেকে ধারণা নিয়ে পুলিশ পদক্ষেপ নিত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কমিউনিটি পুলিশের আইডিয়াটাও একই রকম। কমিউনিটি পুলিশ কমিউনিটিকে সচেতন করে ঘটনা ঘটার আগেই তা রুখে দিতে পারে। সেজন্যই আমরা কমিউনিটি পুলিশিং শুরু করেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সুফল পেয়েছে, আমরাও পাচ্ছি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কমিউনিটি পুলিশের অনেক দায়িত্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা তো ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে পারি না। ঘরে যেসব জনসাধারণ আছেন, তারা যদি সচেতন থাকেন এবং রিয়েল টাইম পুলিশকে তথ্য দেন তাহলে অনেক ঘটনা ঘটবে না। অনেক ঘটনাই আমরা প্রতিরোধ করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।
সাম্প্রদায়িক উস্কানির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে ধরনের উস্কানি আসছিল, যেভাবে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, জনগণকে আকৃষ্ট করে একটি সহিংসতার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের পুলিশ ও জনগণ একত্রিত হওয়ার কারণে এ অবস্থা থেকে আমরা নিস্তার পেয়েছি। যেকোনো একটা বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কারণ আমরা সবাই ধর্মভীরু। আমরা যে যার ধর্ম হৃদয় দিয়ে পালন করি, সেখানে আঘাত এসেছে। আমাদের পুলিশ বাহিনী যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে আমরা বের করে নিয়ে এসেছি। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, জনগণও তাদের ধিক্কার দিচ্ছে।
সাইবার ক্রাইম ধারণার বাইরে বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে আমাদের একটা সাইবার ক্রাইম ইউনিট রয়েছে। যদিও এটি এখন ছোট আকারে রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এটিকে বড় আকারে নিয়ে যাওয়া হবে।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ ও ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।