বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষণ করা হবে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী
চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষণ করা হবে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেছেন, চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক স্মৃতিবিজড়িত স্থান রয়েছে, সেগুলো এখনও সংরক্ষণ হয়নি। কুচক্রীমহল যাতে ইতিহাসকে বিকৃত করতে না পারে, সেজন্য এ স্থানগুলো সংরক্ষণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ‘চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য যে জায়গা বাছাই করা হয়েছে, সেটি চমৎকার একটি জায়গা। এত সুন্দর স্থান দেখে আমি অভিভূত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই এলাকা আরও সুন্দর স্থানে রূপান্তর হবে। এ অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়বে, ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নিউইয়র্কের স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো গুরুত্ব পাবে।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের মহাপরিকল্পনা চলছে। এ জমিগুলো প্রতীকী মূল্যে আমাদের মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত করা হলে আমরা সেটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো। আপনাদের যে পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়ন ও সংরক্ষণ করবো আমরা। পরবর্তীতে যেন মানুষের সামনে তা উপস্থাপন করা যায় সে ব্যবস্থা করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জায়গাগুলো সংরক্ষণ করবো, যাতে কেউ ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে। এক মাস আগে আমাদের মুখ্য সচিবও এ স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেছেন। বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে সম্মতি দিয়েছেন। আমরা শিগগিরই এটি করবো। চট্টগ্রামবাসীর ইচ্ছা, স্বপ্ন, আকাঙ্খা আমরা যাতে পূর্ণ করতে পারি সেজন্য আপনারা দোয়া করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন। যাতে এ দেশ আরও এগিয়ে যেতে পারে।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যা করার দরকার প্রধানমন্ত্রী তা-ই করে দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অতন্দ্র প্রহরী। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু এখনও পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ধর্মের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা ম-পে পবিত্র কুরআন রেখে তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে হবে। জাতির প্রয়োজনে আবারও আমরা রাস্তায় নামবো। স্বাধীনতা বিরোধীদের কঠোর হস্তে দমন করবো।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম ইদ্রিস সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ বক্তব্য দেন ।
জায়গাটি পরিদর্শন শেষে প্রকল্পের বিস্তারিত বর্ণনা দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান।
তিনি বলেন, ‘জায়গাটি উত্তর কাট্টলী মৌজা। চারটি অবৈধ ইটভাটা ছিল এখানে। জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ করার পর আবারও দখল করে তারা। এরপর আমরা পুনরায় সমূলে উচ্ছেদ করি। মুখ্য সচিব এই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। এতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জানিয়েছেন।’
নাজমুল আহসান বলেন, ৩০ একর সরকারি খতিয়ানভুক্ত জায়গা এটি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি শ্মশান রয়েছে এখানে, সেটি আমরা ঠিক রাখবো। এর কোনও ক্ষতি হবে না। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পর এটি হবে দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্মৃতিসৌধ।
এরপর বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।