বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | বরিশাল | শিরোনাম » বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) শিক্ষার্থীদের দুটি গ্রুপের মধ্যে পূর্বের ঘটনার জের ধরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তৌহিদ ফেরদাউস শাওন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, দুজনেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কিছুদিন পূর্বে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান রুমির সঙ্গে আহত ওই শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোনে বিতণ্ডা হয়। তার জের ধরে বুধবার সন্ধ্যায় আনুমানিক ৭ ঘটিকায় দুজনের দেখা হলে পুনরায় বিতণ্ডায় জড়ায় উভয়পক্ষ।
এ সময় হাতাহাতির একপর্যায়ে খালিদ হোসেন রুমির জামা ছিঁড়ে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহপাঠী দলবল নিয়ে পুনরায় তৌহিদ ফেরদাউস শাওনের ওপর হামলা করে। ফলে কপাল ফেটে যায় ওই শিক্ষার্থীর। এরপর আশপাশে থাকা লোকজন তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
ঘটনার প্রায় আধ ঘণ্টা পর ফের নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়ায় ওই শিক্ষার্থীরা। ঘটনা আঁচ পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর তৌহিদ ফেরদাউস শাওন নামে ওই শিক্ষার্থী শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বরিশাল নগরীর শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিম) সার্জারি ওয়ার্ডে (পুরুষ) ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে মারামারিতে জড়িত থাকা ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান রুমি বলেন, আমি সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছি তখন ভাই (শাওন) বসা। এরপর তার লগে আমার দেখা। তখন ভাইয়ের সঙ্গে আমি কথাবার্তা বললাম। কারণ আমাদের মধ্যে পূর্বের একটা জের ছিল। তখন ভাই আমাকে খারাপ আচরণ, গালাগালি, ধাক্কাধাক্কি ও আমার কলার ধরে এবং তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে আমাকে আঘাত করতে চায়।
অন্যদিকে এ বিষয়ে আহত ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থী রিয়াজ মোল্লা বলেন, এর আগেও খালিদ হাসান রুমি শাওনকে ক্যাম্পাসে না আসার হুমকি দিয়েছে। বুধবার বিকেলে শাওন হাসিব নামের একটি ছেলের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল। ওই সময় সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল সামাদ শান্ত, নাওয়ার হক, খালিদ হাসান রুমি, আজমাঈন রাদ, ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন হাসিবকে ডেকে সরিয়ে দিয়ে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই পেটানো শুরু করে দিয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর পঞ্চম ব্যাচের তানভীন রিদম আসে এবং কিছুক্ষণ বিরতির পর আবার মারে। এ ছাড়া শাওনের পকেটে ওরা ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে ওর কাছে ছুরি পাওয়া গেলে বলে নাটক তৈরি করেছে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, আমি ক্যাম্পাসের মেইন গেটের সামনেই ছিলাম। তখন লক্ষ্য করলাম যে বেশ কিছুক্ষণ ধরে একটি মারামারির ঘটনা চলছে। তারপর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আলাদা করি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে এনে এনএসআই ও সিটিএসবির সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের উভয়ের বক্তব্য নেই। সেখান থেকে জানতে পারি তাদের মধ্যে পূর্বের ঘটনার জের ছিল এবং একটি ছোড়া উদ্ধার করি। উভয়ের বক্তব্য এবং উদ্ধারকৃত ছোড়া প্রশাসনের জিম্মায় রাখা রয়েছে। আগামীকাল এ বিষয়ে পুরো তথ্য জেনে প্রশাসন তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, বিষয়টি আমি শিক্ষকদের কাছ থেকে শুনেছি। ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল বিষয়টি সম্পর্কে পুরো বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনা টের পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিয়োজিত রয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না। আমাদের পুলিশ ক্যাম্পের একটি টিম ফোন দিয়েছে তাই আমরা এসেছি।