বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | রংপুর | শিরোনাম » রংপুর-বড়খাতা সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,রেড অ্যালার্ট জারি
রংপুর-বড়খাতা সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,রেড অ্যালার্ট জারি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এ সময় ভেঙে গেছে তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস সড়ক।
বুধবার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ওই বাইপাস সড়ক ভেঙে যায়। এ সময় রংপুর-বড়খাতা সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় রেড অ্যালার্ট (লাল সংকেত) জারি করে তিস্তার আশপাশের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাত থেকে তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপরে। তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে।
জানা গেছে, বুধবার (২০ অক্টোবর) ভোর থেকে তিস্তার পানি বাড়ায় লালমনিরহাটের তিন উপজেলার তিস্তার চর এলাকায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ সময় তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধান ও ভুট্টাক্ষেত। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, পাটগ্রামের দহগ্রাম, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম এলাকার কামাল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাত থেকে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় ধানক্ষেতসহ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে অনেক পরিবার উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
সিংঙ্গীমারী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, তিস্তার পানির কারণে বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এদিকে ভেসির বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটি ভেঙে হাতীবান্ধা শহরে পানি প্রবেশ করলে শতশত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউ দৌলা বলেন, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ভারতের গজলডোবার ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই তিস্তাপাড়ের মানুষদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, ভারতে ভয়াবহ বন্যার কারণে বুধবার (২০ অক্টোবর) সকালে হঠাৎ করে ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। সকাল ৬টায় ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র ব্যারেজের মূল পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। যে কোনো সময় পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, তিস্তার পানি বাড়ার বিষয়টা আমরা জেনেছি। পানিবন্দী পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সহায়তা আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা পানিবন্দী পরিবারগুলোর জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করছেন।