বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম | স্বাস্থ্য » “মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের টীকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী”
“মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের টীকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী”
আজ ১৪ অক্টোবর, দুপুরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও মানিকগঞ্জের কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃক আয়োজিত কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টীকাকেন্দ্রে মানিকগঞ্জের চারটি সরকারি বিদ্যালয়ের ১২০ শিশুকে করোনার টিকা দেয়া শুরুর মাধ্যমে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের টীকাদান কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা,অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা, কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ, মানিকগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন সহ জেলার অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টীকাদান কর্মসূচি উদবোধনের মাধ্যমে মানিকগঞ্জে চারটি সরকারি বিদ্যালয়ের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১২০ শিক্ষার্থীকে প্রথমবারের মত করোনার টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হয়।
উদ্বোধন শেষে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি ও ফাইজারের টিকা সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “এই টিকাটি আমেরিকা, ইউরোপসহ অন্যান্য অনেক দেশে দেয়া হচ্ছে। টিকাটি অনেক বেশী নিরাপদ। আমরা চাই, আমাদের শিশুরাও নিরাপদে থাকুক। তারা স্কুলে আসছে, তারা যেন করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকে। এইজন্য ফাইজারের এই টিকাটি আমাদের শিশুদের দিয়ে ট্রায়াল করা হলো। অল্প দিনের মধ্যেই সারা দেশেই ফাইজারের এই টিকাটি আমাদের দেশের ছেলে মেয়েদের দেয়া হবে।”
মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের টীকাদান কার্যক্রমের উদবোধনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, “যেসময়ে বিশ্বের বহু দেশ টীকা না পেয়ে হাহাকার অবস্থায় আছে সেসময়ে বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে অন্তত ৬ কোটি মানুষকে ইতোমধ্যেই ভ্যাক্সিন প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা,কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজ, সিরাম ইন্সটিটিউট বা চীনের সিনোফার্মের টিকা সহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে ইতোমধ্যেই দেশে অন্তত ২৪ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতি মাসেই পর্যাপ্ত সংখ্যক টীকা দেশে আসছে। ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকেও টীকা আসা শুরু হয়েছে। বর্তমানে টীকাদানে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। আমরা গত ২৮ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে এক দিনেই প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষকে ভ্যাক্সিন প্রদান করে আমাদের সক্ষমতার প্রমান দিতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে দেশের বয়স্ক নাগরিকদের টীকা দেবার পাশাপাশি দেশের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টীকা দিয়ে দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্কুল কলেজের পাঠদান কার্যক্রম চলমান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দেশে বর্তমানে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ এখন ভারত, পাকিস্তান সহ বহু দেশের থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে, এই ভালো অবস্থানকে আমাদের সকলের সহোযোগিতায় ধরে রাখতে হবে। করোনা প্রতিরোধে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা সহ আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নির্দেশনা ও মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাত এই করোনা প্রতিরোধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন এই করোনাকে আর উপরের দিকে উঠতে না দিতে দেশের সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা লাগবে। সকলে মিলে আরেকটু সচেতনতা বজায় রাখতে পারলে দেশের করোনা আরো নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
উল্লেখ্য, গড়পাড়া জাহিদ মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার তোয়া প্রথম মেয়ে শিশুর টিকা গ্রহন করেছে।টিকা গ্রহন শেষে তাসমিয়া তোয়া উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট জানিয়েছে, স্কুল খোলার পর থেকে ভয়ে ভয়ে ক্লাস করেছি। এখন টিকা নিয়ে নিশ্চিন্তে ক্লাস করতে পারবো। করোনার ভয় মন থেকে কেটে গেছে। শিশুদের জন্য টিকার ব্যবস্থা করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মো: জাকির হোসেন বলেন, শিশুদের টিকা দেয়ার সব ধরনের ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে। টিকা নেয়ার পর কোন শিশু যদি অসুস্থ্য বোধ কিংবা কোন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়, তার জন্য মেডিকেল টিম রাখা হয়েছে। এছাড়া টিকা নেয়া শিশুরা বাড়িতে গিয়েও কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সার্বক্ষনিক নজরদারি রাখা হয়েছে। তবে টিকা প্রাপ্ত শিশুদের এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা দেখা যায়নি বলে তিনি জানান।