শুক্রবার, ৮ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | মাদারীপুর | শিরোনাম » হামলা করে জমির নথি-স্বর্ণালঙ্কার লুট, নারীসহ আহত ৯
হামলা করে জমির নথি-স্বর্ণালঙ্কার লুট, নারীসহ আহত ৯
মাদারীপুর সদর উপজেলায় জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে নারীসহ নয়জন আহত হয়েছেন। এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় জমির মূল নথি এবং নগদ অর্থ-স্বর্ণালঙ্কার।
সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের কালাইমারা গ্রামে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতে সদর থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী হেলাল উদ্দিন বয়াতীর পরিবার। শুক্রবার সকালে ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবিতে সাংবাদিকদেরও এ অভিযোগ জানান তারা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কালাইমারা গ্রামের জাকির বয়তীর সঙ্গে পাশের বাড়ির হেলাল উদ্দিন বয়াতীর জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। জাকির বয়াতী ও তার লোকজন হেলাল উদ্দিন বয়াতীর জমি জোরপূর্বক দখল নেয়ার চেষ্টা করছিলেন। ফলে হেলাল উদ্দিন বয়াতী আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামালা করেন। পরবর্তীতে আদালত মামলা তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উভয়পক্ষকে জমির মূল নথিসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে বলেন। পরে হেলাল উদ্দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থেকে ওই কর্মকর্তাকে দেখায়। কিন্তু জাকির বয়াতী কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে জাকির বয়াতী ও তার লোকজন হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের জখম করেন। তখন জায়গা-জমির মূল নথি এবং টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার তারা ছিনিয়ে নেন।
ভুক্তভোগী হেলাল উদ্দিন বয়াতী বলেন, ‘জমিডা আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি। সেইডা নিলাম হইয়া গেলে আমি নিলাম ধইরা আনছি। তারপরও আমার জমি জোর কইরা দখল করছে জাকির বয়াতী, কালু বয়াতী ওরা। আমি সেইজন্য কোর্টে মামলা করছি। জমির তদন্তে আহি এসিল্যান্ড অফিসে। আমি আমার কাগজ তাদের দেহাইছি। কিন্তু তারা যাইতে না যাইতেই আমার হাত থেকে কাগজ ছিনাইয়া লইয়া যায় জাকির বয়াতীরা। আমি বাধা দিতে গেলে আমারে মারে, পরে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে বাঁচাইতে আইলে সবাইকে দা দিয়া কোপায়। এসময় আমার স্ত্রী ও পুত্রবধূসহ নয়জন গুরুতর আহত হই। আমি এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন বয়াতীর মেয়ে রহিমা আক্তার বলেন, ‘আমার আম্মা ও আমার ভাইরা যখন অসুস্থ হইয়া পড়ে তাদের নিয়া আমরা অটোতে করে হাসপাতালে আইতে ছিলাম, সেই অবস্থায় ওরা আবার সামনে আইসা অটো ভাঙচুর করছে। আমাগো হাসপাতালে আইতে দিব না। পরে আমরা কালকিনি ঘুইরা সদরে আইছি, এতে আমাগো অনেক ক্ষতি হইয়া গেছে, অনেক রক্ত পড়ছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে মামলার কথা শুনে বাড়ি থেকে গা-ঢাকা গিয়েছে জাকির বয়াতী। কথা হয় জাকির বয়াতীর স্ত্রী হনুফা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে হেলাল উদ্দিনের জমি নিয়ে ঝামেলা আছে। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দিয়েছে।’ এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় থানার একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি আমলে নেয়া হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’