সোমবার, ২৩ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও আন্দোলনের মূল দর্শন - স্পীকার
দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও আন্দোলনের মূল দর্শন - স্পীকার
ঢাকা, ২৩ আগস্ট ২০২১: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাঙালি জাতিকে বিশ্বসভায় আত্মপরিচয় নিয়ে চলার পথ তৈরি করে দেয়া তথা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ, লাল-সবুজের পতাকা, ১৯৭২এর সংবিধান দিয়ে গেছেন বিশ্ববরেণ্য ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার বন্ধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর রাজনীতি ও আন্দোলনের মূল দর্শন। তাঁর ঐতিহাসিক ৭মার্চের ভাষণ আজ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত। দুঃখের বিষয়, বিশ্বের ইতিহাসের জঘন্যতম ও নিকৃষ্টতম হত্যাকান্ড বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড। দীর্ঘ সময় এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথও বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্তৃক সংসদ ভবনস্থ শপথ কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পীকার আজ এসব কথা বলেন। এসময় ১৯৭৫ এর ১৫আগস্ট শহীদগণের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় সংসদ সচিবালয় মসজিদের ইমাম ক্বারী আবু রায়হানের পরিচালনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
স্পীকার বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে বঙ্গবন্ধুর চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না, সারাজীবন বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। জমিদারী প্রথার বিরুদ্ধেও তিনি একথা বলেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তাঁকে ছাত্রত্ব হারাতে হয়েছিল। শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে থেকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা তিনি। সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আন্দোলন-সংগ্রামকে তিনি বেগবান করেছেন। যথাযথ সময়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিরল প্রতিভা তাঁর মধ্যে আমরা দেখতে পাই।
ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে, যার মূল উদ্দেশ্য জাতির পিতার আদর্শ, দর্শন ও চেতনাকে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ১২৮টি অডিও ভাষণ সংসদ লাইব্রেরীতে সংরক্ষণ, মুজিববর্ষের বিশেষ অধিবেশন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ ওয়েবসাইট তৈরি, শতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর একশ উক্তি, বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ, বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন প্রতিষ্ঠাসহ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ আরো অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।
চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনকে আগামী প্রজন্মের কাছে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে তুলে ধরার বিভিন্ন উদ্যোগ মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহীত হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর কর্মজীবন সম্পর্কে অবহিত করতে সংসদে একটি বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আগামী নতুন প্রজন্মের সংসদ সদস্য এবং সকলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
হুইপ আতিকুর রহমান এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাঁকে সপরিবারে হত্যা প্রকৃতপক্ষে বাঙালি জাতিসত্তাকে বিনষ্ট করার প্রয়াস ছিল।
হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, যে নেতার জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশ হতো না, আমরা এমপি, মন্ত্রী হতে পারতাম না, ব্যাংক-বীমা-কর্পোরেশন কিছুই হতো না, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড জাতির জন্য কলঙ্কিত অধ্যায়। সপরিবারে তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল জাতিকে অন্ধকারে পতিত করে পুনরায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করা।
সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং পরিচালক তারিক মাহমুদ ও উপ পরিচালক সামিয়া রুবাইয়াত হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক উপসচিব এস এম মঞ্জুর কবিতা আবৃত্তি করেন। সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক মোঃ তারিক মাহমুদ, উপ পরিচালক সামিয়া রুবাইয়াত হোসাইন, ডাক্তার সাইফুল আলম, জয়ন্ত সরকার, খুরশিদা খাতুন, নাজমুন্নাহার পুতুল বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ করেন। সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি উপসচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক সহকারী সচিব আসিফ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের উজ্জ্বল অনুষ্ঠানে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ এবং সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।