শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন - তথ্য ও সম্প্রচার সচিব
আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন - তথ্য ও সম্প্রচার সচিব
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেছেন, আমাদের দেশে নারী নির্যাতন ও যৌতুক বিরোধী আইন অনেক আগে হয়েছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অতটা অগ্রসর হতে পারিনি। রাষ্ট্র আইন তৈরী করেছে কিন্তু এটাকে জনগণের কল্যাণে পৌঁছে দেয়ার জন্যে মানুষের মাঝে যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী করা দরকার, সেটা করতে আমরা অতটা অগ্রসর হইনি। এজন্য আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন।
আজ শনিবার চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আয়োজনে প্রথম আন্তঃকলেজ জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২১ এর ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিই নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রধান অন্তরায়’। এটির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ঢাকা নটরডেম কলেজ দল, বিপক্ষে ছিলেন চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ দল। দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে বিতর্ক প্রতিযোগীতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন কথাসাহিত্যিক বাদল সৈয়দ, প্রাক্তন বিতার্কিক ও উপ পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক এবং প্রাক্তন বিতার্কিক ও সাংবাদিক মাহফুজ মিশু।
প্রতিযোগীতায় ৮০.১ পয়েন্ট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ঢাকা নটরডেম কলেজ দল, ৭৯.১৬ পয়েন্ট পেয়ে রানার্সআপ হয়েছেন চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট কলেজ দল। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয়েছেন নটরডেম কলেজের দলনেতা আবিদ মাহমুদ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহবার হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ মহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ কুমার খাস্তগীর।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বলেন, ‘বিতর্ক প্রতিযোগীতায় শুধু জেতা নয়, যারা সাহস করে বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটা টিমই বিষয় ভিত্তিক অনেক লেখাপড়া করেছে। এরমধ্য দিয়ে তোমাদের অনেক জ্ঞান অর্জন হয়েছে, পাশাপাশি তোমাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও একটা পরিবর্তন এসেছে। তোমাদের ভেতরে একটা আইডিয়া ডেভেল্প করেছে বিতর্কে জিততে গেলে নিজেদেরকে আরো কিভাবে প্রস্তুত করা দরকার, এবং প্রস্তুত করতে হয়।’
তিনি বলেন, দৃষ্টিভঙ্গি যদি পৃথিবীতে না থাকতো তাহলে পৃথিবীতে যুগে যুগে সৃষ্টিকর্তা যেসব ধর্ম প্রচারকদের পাঠিয়েছেন তারা ধর্ম প্রচার করে মানুষকে সৎ এবং ভালো পথে নিয়ে আসতে পারতেন না। এটার ফাউন্ডেশন হলো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি।
দুটি দলেরই বিষয়বস্তুর ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অত্যন্ত ভালো হয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বলেন, রাষ্ট্রের নিয়ম কানুন জনগণের কল্যাণের জন্যই করে থাকে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রের আইনের কাঠামো নিয়ে এসে কিন্তু কোন কিছুকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারেনা।আমাদের সমাজের পুরুষদের মাঝে একটা পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি আসছে বলেই আজকে নারীরা এত উন্নতি করছে এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।
উল্লেখ্য, সারা দেশের ৪৮টি কলেজ এই বিতর্ক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের একদল সুদক্ষ প্রাক্তন বিতার্কিক, বিতর্ক প্রশিক্ষক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা বিভিন্ন পর্বের বিচারকার্যের দায়িত্ব পালন করেন। সেইসাথে, সমাজের ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এই বিতর্ক পর্বগুলোতে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই আয়োজনকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করেছেন।