শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিক্ষা ও প্রযুক্তি | শিরোনাম » বিদ্যালয়ের টয়লেটে ১১ ঘণ্টা আটকে থাকল দশম শ্রেণির বাক্প্রতিবন্ধী ছাত্রী
বিদ্যালয়ের টয়লেটে ১১ ঘণ্টা আটকে থাকল দশম শ্রেণির বাক্প্রতিবন্ধী ছাত্রী
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে স্কুলের টয়লেটে ১১ ঘণ্টা আটকে থাকার পর বাকপ্রতিবন্ধী এক শিক্ষার্থীকে গলা ও মুখে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) উপজেলার হোসেনপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী পাশের কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর এলাকার বাসিন্দা। এদিকে বিষয়টির জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অসচেতনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, বাকপ্রতিবন্ধী এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্কুলে যায়। বিদ্যালয় ছুটির কিছুক্ষণ আগে সে টয়লেটে যায়। এ সময় ছুটির ঘণ্টা বেজে উঠলে সব শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চলে যায়। এর পর বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা বেগম টয়লেটে তালা লাগিয়ে দেন। সবার অজান্তে টয়লেটে আটকা পড়ে যায় ওই ছাত্রী। এদিকে স্কুল ছুটির পরও ওই ছাত্রী বাড়িতে না যাওয়ায় তার বাবা চারিদিকে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেন। তিনি তার সব আত্মীয় স্বজন ও মেয়ের সহপাঠীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করেন। কিন্তু মেয়ের কোনো সন্ধান পান না।
এরপরে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার পর পাশের স্বর্ণকার পাড়ার আল আমিন স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনের আলোর মাধ্যমে টয়লেটের ভেন্টিলেটরে একটি হাত দেখতে পান। তিনি ভয় পেয়ে তাৎক্ষণিক কয়েকজনকে বিষয়টি জানান। পরে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে গিয়ে তালা ভেঙে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে টয়লেট থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধার শেষে স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম তার বাড়িতে ওই ছাত্রীকে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক সেবা দেন। উদ্ধারের পর ছাত্রীর বাবাকে সংবাদ দিলে তিনি মেয়ের জন্য সেখানে ছুটে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আল আমিন বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে পুলের ওপর ঘুরতে আসলে শুনতে পাই বিদ্যালয়ের বাথরুমে কারো শব্দ। পরে মোবাইলের টর্চ জ্বেলে ভেন্টিলেটরের ফাঁকে মানুষের হাত দেখে প্রথমে ভূত ভেবে চমকে উঠি। এ সময় এলাকার লোকজনকে ডেকে এনে তালা ভেঙে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় তার মুখের মাস্কে রক্তে ভেজা দেখতে পাই।
বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা আক্তার শানু জানান, বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সাড়ে ১২টায় নয়, তিনি বিকেল ৪টার দিকে বাথরুমের তালা বন্ধ করেছেন। তবে তিনি ভেতরে কেউ আছে কিনা তা না দেখেই দরজা বন্ধ করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমীর হোসেন জানান, তিনি বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দাপ্তরিক কাজে বিদ্যালয়ে ছিলেন। বের হবার আগে পর্যন্ত এমন কিছু তার নজরে পড়েনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আহসান উল্যাহ চৌধুরী জানান, তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, আমি ঘটনা অবগত হয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আহসান উল্যাহ চৌধুরীকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের কারো গাফিলতি পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।