শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » এলডিসিগুলোকে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়া প্রয়োজন - অর্থমন্ত্রী
এলডিসিগুলোকে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়া প্রয়োজন - অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এর সাথে আজ জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (UNESCAP) নির্বাহী সচিব ভার্চুয়ালি আলোচনা করেন। সাক্ষাতে আগামী ২০-২২ অক্টোবর, ২০২১ অনুষ্ঠিতব্য Macroeconomic Policy, Poverty Reduction and Financing for Development (MPFD) সভায় বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ বিষয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রী নীতিগত পরামর্শমূলক সেবা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে নানাভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করায় UNESCAP এর প্রতি কৃজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য UNESCAP এর সহায়তা অব্যাহত রাখতে এবং আরও শক্তিশালী করতে আশা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহনশীলতা ও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও সকল দেশের মতো কোভিড-১৯ মহামারি আপাতত আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করেছে। তথাপিও, আমাদের অসাধারণ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক এই কোভিড-১৯ ক্রান্তিকালে গৃহীত বিচক্ষণ আর্থিক এবং মুদ্রা নীতির কারণে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে পরিচালনা করতে পেরেছি। জীবন ও জীবিকার মধ্যে দূরদর্শী ভারসাম্য নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। ২০২০ সালের আইএমএফ-এর অক্টোবরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে গড় ৪ দশমিক ৪ শতাংশের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, সেসময়ে অতি অল্প কয়েকটি ইতিবাচক অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, মহামারি প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সঠিক পথে রয়েছে। তারপরেও, অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা হ্রাস করার লক্ষ্যে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনকারী এলডিসিগুলোকে ট্রানজিশন এবং ট্রানজিশন পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করার জন্য চতুর্মুখী কৌশলের নীতি বিবৃতি অনুমোদন করেছে। এখন আমরা এমন একটি উন্নয়ন পদ্ধতির অনুসরণ করছি যা আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল এবং পরিবেশবান্ধব। কারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী UNESCAP এর ৭৭তম কমিশন অধিবেশনে তাঁর ভাষণে এটি ঘোষণা করেছেন এবং নিশ্চিত করতে একে অপরকে সাহায্য করার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন যে, UNESCAP এশিয়ান হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে এবং ড্রাই পোর্টস উদ্যোগের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি থাইল্যান্ড, ভারত এবং মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে প্রকল্পে যোগদানের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে UNESCAP কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন। যার মাধ্যমে UNESCAP-এর আঞ্চলিক এবং আন্তঃআঞ্চলিক উদ্যোগগুলো আরো বেশি জোরালো হবে।
বাণিজ্য সুবিধা, ডিজিটাল বাণিজ্য, সীমান্তে কাগজবিহীন বাণিজ্য, পুঁজিবাজার উন্নয়ন, পিপিপি নেটওয়ার্ক, টেকসই মাল্টিমোডাল পরিবহন, জ্বালানি নীতি এবং পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আরো প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং ক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়তার জন্যও UNESCAP কে অর্থমন্ত্রী অনুরোধ করেন। পাশাপাশি, দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার উপায় হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষা, লিঙ্গ সমতা এবং এসএমই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতাকেও কাজে লাগাতে পারে বলে উল্লেখ করেন।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (UNESCAP) নির্বাহী সচিব আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাহবান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি এই অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় UNESCAP সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশে আরো চাহিদাভিত্তিক সক্ষমতা নির্মাণ প্রকল্প সহায়তার মাধ্যমে UNESCAP এর কর্মপরিধি আরো বাড়ানোর আশা ব্যক্ত করেন।