শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
N2N Online TV
শনিবার, ২১ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » তালেবানের বিকল্প নেই - রাশিয়া
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » তালেবানের বিকল্প নেই - রাশিয়া
১৮৮ বার পঠিত
শনিবার, ২১ আগস্ট ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তালেবানের বিকল্প নেই - রাশিয়া

---

কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গত কয়েক দিনে সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান যে ধরনের আচরণ প্রদর্শন করেছে তাতে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনোভ। তিনি বলেছেন, দেশটিতে কট্টরপন্থী এই গোষ্ঠীর বিকল্প নেই এবং তালেবান প্রতিরোধ ব্যর্থ হবে।

তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার যে সুসম্পর্ক চলছে, শুক্রবার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনোভের করা ওই মন্তব্য সেই সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করছে। ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠীকে মস্কোর স্বীকৃতি এবং নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।

আফগানিস্তানের অস্থিতিশীলতা মধ্য-এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো নিশ্চিত করতে চায় মস্কো। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে পরিচিত মধ্য-এশিয়াকে নিজের আঙ্গিনা বলে মনে করে মস্কো।

কাবুল থেকে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ঝিরনোভ বলেন, তালেবান নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগের চেয়ে বর্তমানে রাজধানী কাবুলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেক ভালো। আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি আশাবাদী বলেও জানান।

ঝিরনোভ বলেন, কাবুলের পরিস্থিতিকে একটি সতর্কতামূলক আশা হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, সেখানে একটি খারাপ শাসনব্যবস্থা ছিল, যা অদৃশ্য হয়ে গেছে এবং মানুষ আশাবাদী। তারা বলেছেন, ‘শাসনব্যবস্থা খারাপ হতে পারে না। যে কারণে এটি আরও ভালো হওয়া উচিত। এটি উতড়ে যাওয়া তালেবানের আরেকটি পরীক্ষা। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পর তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ শুরু করা উচিত।’

বর্তমানে রাজধানীর হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরের ভেতরে এবং বাইরে ছাড়া কাবুল অনেকাংশেই শান্ত। যদিও তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজার হাজার মানুষের হুড়োহুড়িতে বিমানবন্দরে এখন পর্যন্ত ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে ন্যাটো।

পশ্চিমা বিশ্বের কিছু রাজনীতিক ও মানবাধিকার কর্মীর সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের অনেকেই আশঙ্কা করছেন, কঠোর বিধি-বিধানের প্রয়োগের মাধ্যমে আফগানিস্তানে সহিংসতা অব্যাহত রাখতে পারে তালেবান।

ঝিরনোভ বলেছেন, ‌‌‘মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি পাল্টে গেছে এবং তালেবান আশাব্যাঞ্জক কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা বাস্তবতাকে নাকচ করে দিতে পারি না। তারা (তালেবান) এখন ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষ। আফগানিস্তানে তালেবানের বিকল্প নেই।’

এদিকে, ১৯৮০’র দশকে আফগানিস্তানের সোভিয়েতবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রধান নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন। কাবুলের উত্তরের পাঞ্জশির উপত্যকা থেকে তিনি তালেবানকে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন। প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার দুর্গ হিসেবে পরিচিত পাঞ্জশির উপত্যকা গৃহযুদ্ধের সময় ১৯৯০ এর দশকেও তালেবানের হাতে পতন হয়নি। এমনকি সোভিয়েত আমলেও এই উপত্যকা জয় করতে পারেনি কেউই।

আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেও তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, তিনি আফগানিস্তানেই আছেন এবং আশরাফ গনির পলায়নের পর তিনিই এখন সাংবিধানিকভাবে আফগানিস্তানের বৈধ তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট। ঝিরনোভ বলেছেন, সালেহর ঘোষণা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল এবং তালেবানকে প্রতিহত করার জন্য পাঞ্জশিরভিত্তিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ হয়েছে।

তিনি বলেন, তাদের সামরিক কোনও সম্ভাবনা নেই। সেখানে বেশি মানুষও নেই। আমরা এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি যে, তাদের মাত্র ৭ হাজার সশস্ত্র জনগণ আছে। তারা ইতোমধ্যে জ্বালানির সমস্যায় পড়েছে। তালেবানরা একটি হেলিকপ্টার উড়ানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের কোনও পেট্রোল নেই, সরবরাহও নেই।

তালেবানের কারণেই কি মানুষ আফগান ছাড়ার চেষ্টা করছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেকই এখন এই পরিস্থিতিকে পশ্চিমে তাদের নতুন জীবনের সম্ভাব্য টিকেট হিসেবে দেখছেন। এটার সঙ্গে তালেবানের সম্পর্ক নাও থাকতে পারে।



আর্কাইভ