রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ ব্যাটারদের ব্যর্থতার ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত
টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ ব্যাটারদের ব্যর্থতার ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত
বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত হয়েছে। বৃষ্টির দাপটের মাঝেও তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ফুটে উঠেছিলো বাংলাদেশ ব্যাটারদের ব্যর্থতা। ১৩ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান করেন সাকিব-লিটন-মাহমুদুল্লাহরা। টেস্ট সিরিজের পর টি-টোয়েন্টিতে এসেও ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
ডোমিনিকার উইন্ডসর পার্কে বাংলাদেশ সময় গতরাত সাড়ে ১১টায় প্রথম টি-টোয়েন্টি শুরুর কথা ছিলো। কিন্তু বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে খেলা মাঠে গড়াতে পারেনি। মাঝে-মাঝে বৃষ্টি থামলেও, মাঠ ভেজা থাকায়, খেলা শুরুতে বিলম্ব হয়েছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১টায় টস হয়। টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। আর বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ১৫ মিনিটে খেলা শুরু হয়। ততক্ষণে ম্যাচটি ১৬ ওভারে নির্ধারিত হয়। পাওয়ার প্লে ঠিক করা ৫ ওভার। একজন সর্বোচ্চ ৪ ওভার বোলিং করতে পারবেন। বাকিরা সর্বোচ্চ ৩ ওভার করে।
বাংলাদেশের পক্ষে ইনিংসের উদ্বোধন করেন মুনিম শাহরিয়ার ও এনামুল হক বিজয়। ২০১৫ সালের পর আবারও টি-টোয়েন্টি একাদশে মাঠে নামেন বিজয়।
স্পিনার আকিল হোসেনকে দিয়ে ইনিংসের প্রথম ওভার শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম বল ডট হয়। দ্বিতীয় বলে ২ রান নেন মুনিম। আর তৃতীয় বলে আউট হয়ে যান মুনিম। অফ স্টাম্পের বাইরে বল সামনের পায়ে খেলতে গিয়ে ঠিক মতো বল-ব্যাটের সন্ধি ঘটাতে পারেননি মুনিম। ব্যাটের বাইরের কানায় বল স্পর্শ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটরক্ষক ডেভন থমাসের হাতে জমা পড়ে।
ব্যক্তিগত ২ রানে মুনিমের বিদায়ে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বল থেকে ১ নিয়ে রানের খাতা খোলেন সাকিব। এতে ওভারের শেষ বলে স্ট্রাইক পান বিজয়। আকিলের স্টাম্পের বল কাট করে থার্ড ম্যান দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করে নেন তিনি।
দ্বিতীয় ওভারে দু’টি বাউন্ডারি হাকান দু’জনে। আকিলের করা তৃতীয় ওভারের শেষ দুই বল থেকে ১টি করে চার ও ছক্কা আদায় করে নেন সাকিব। ফলে ৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩২।
বাউন্ডারি দিয়ে চতুর্থ ওভার শুরু করেছিলেন বিজয় কিন্তু বাঁ-হাতি পেসার ওবেড ম্যাককওয়ের তৃতীয় বলটি লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে মিস করে লেগ বিফোর হন আনামুল। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে না পারলে ৩টি চারে ১০ বলে ১৬ রানে শেষ হয় বিজয়ের ইনিংস।
দলীয় ৩৬ রানে বিজয় ফেরায় ক্রিজে সাকিবের সঙ্গী হন এ বছর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বিশে^র প্রথম ব্যাটার হিসেবে ১হাজার রান করা লিটন দাস।
বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খোলেন লিটন। ওভার বাউন্ডারি দিয়ে ষষ্ঠ ওভার শুরু করেছিলেন সাকিব। তাই ৬ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৫৬ রানে তুলে ফেলে বাংলাদেশ। কিন্তু সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বিদায় নিতে হয় লিটনকে।
পেসার রোমারিও শেফার্ডের স্লোয়ার বাউন্সার বুঝতে না পেরে পুল শট খেলেন লিটন আকাশে বল তুলে দিলে তালুবন্দি করতে ভুল করেননি প্রতিপক্ষ অধিনায়ক পুরান। ২টি চারে ১৪ বলে ৯ রান করেন লিটন।
পরের ওভারে বিদায় ঘটে মারমুখি মেজাজে থাকা সাকিবেরও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের অফ-স্টাম্পের বল লেগ সাইডে টেনে স্লগ সুইপ শট খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন সাকিব।
সাকিবের আউটের পর আবারও বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ৩৪ মিনিট খেলা বন্ধ থাকায় এরপর ১৪ ওভারে নির্ধারিত হয় ম্যাচটি। বিরতির পর প্রথম বলে আফিফ হোসেনকে শিকার করেন ওয়ালশ। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লং-অনে ক্যাচ দেন আফিফ। ২ বল খেলে খালি হাতে ফিরেন আফিফ।
অষ্টম ওভারে তিন বলের ব্যবধানে সাকিব ও আফিফকে হারিয়ে ৬১ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এতে ষষ্ঠ উইকেটে সাবধানী হয়ে পড়েন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান। উইকেটে সেট হবার চেষ্টা করেন তারা। তবে ১১তম ওভারে শেফার্ডের বল পয়েন্ট দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন ১৩ বলে ৮ রান করা মাহমুদুল্লাহ। পয়েন্টে দারুন ক্যাচ নেন ওয়ালশ।
মাহমুদুল্লাহর বিদায়ের ওভারে থামতে হয় ১ রান করা মাহেদি হাসানকে। আম্পায়ার কট বিহাইন্ডের আউট না দিলেও, রিভিউ নিয়ে মাহেদির বিদায় নিশ্চিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দলীয় ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় মারমুখী হয়ে উঠেন নুরুল। ওডেন স্মিথের করা ১৩তম ওভারে দু’টি ছক্কা মারেন নুরুল। নুরুলের দুই ছক্কায় বাংলাদেশের স্কোর ১শতে পৌঁছায়। তবে ঐ ওভারেই আউট হন নুরুল। ওভারে তৃতীয় ছক্কা মারতে গিয়ে কাউ কর্নারে ব্রান্ডন কিংকে ক্যাচ দেন ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৬ বলে ২৫ রান করা নুরুল।
নুরুলের আউটের পর আবারও বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৩ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১০৫ রান। পরবর্তীতে দু’দলের অধিনায়কের সাথে আলাপ করে ম্যাচটি পরিত্যক্ত করতে বাধ্য হন ম্যাচ কর্মকর্তারা।
এসময় নাসুম আহমেদ ৭ ও শরিফুল ইসলাম ০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেফার্ড ৩টি ও ওয়ালশ ২টি উইকেট নেন।
আজ রাতেই একই ভেন্যুতে হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।
স্কোর কার্ড : (টস-ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
বাংলাদেশ ইনিংস :
মুনিম ক থমাস ব আকিল ২
আনামুল এলবিডব্লু ব ম্যাককয় ১৬
সাকিব ক থমাস ব ওয়ালশ ২৯
লিটন দাস ক পুরান ব শেফার্ড ৯
মাহমুদুল্লাহ ক ওয়ালশ ব শেফার্ড ৮
আফিফ ক কিং ব ওয়ালশ ০
নুরুল হাসান ক কিং ব স্মিথ ২৫
মাহেদি ক থমাস ব শেফার্ড ১
নাসুম অপরাজিত ৭
শরিফুল অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (নো-২, ও-৬) ৮
মোট (৮ উইকেট, ১৩ ওভার) ১০৫
উইকেট পতন : ১/২ (মুনিম), ২/৩৬ (আনামুল), ৩/৫৬ (লিটন), ৪/৬০ (সাকিব), ৫/৬০ (আফিফ), ৬/৭৫ (মাহমুদুল্লাহ), ৭/৭৭ (মাহেদি), ৮/১০৩ (নুরুল)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং :
আকিল : ৩-০-২২-১,
শেফার্ড : ৩-০-২১-৩,
ম্যাককয় : ২-০-১৬-১ (নো-১),
স্মিথ : ২-০-২২-১ (নো-১),
ওয়ালশ : ৩-০-২৪-২ (ও-২)।
ফল : পরিত্যক্ত।