বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ব্যালন ডি’অর জিততে লবিং করেছিলেন রামোস!
ব্যালন ডি’অর জিততে লবিং করেছিলেন রামোস!
২০১৮ সালে লিভারপুলকে হারিয়ে ১৩তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করে রিয়াল মাদ্রিদ। লিগে যদিও বার্সেলোনা ও অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের পেছনে থেকে তৃতীয় হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ, তবে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে দারুণ পারফর্ম করে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল কনফিডেনশিয়াল সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে ব্যালন ডি’অর জেতার আশায় লবিংয়ের আশ্রয় নিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ ও স্পেনের অধিনায়ক সার্জিও রামোস। এ নিয়ে সরগরম এখন ইউরোপিয়ান ফুটবল।
গোপন খবরাখবর ফাঁস করায় এল কনফিডেনশিয়ালের জুড়ি মেলা ভার। এবার এই সংবাদমাধ্যমের কারণে আলোচনায় রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে পিএসজিতে খেলা স্প্যানিশ কিংবদন্তি সার্জিও রামোস। তারা এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসের সঙ্গে ব্যালন ডি’অর নিয়ে লবিং করেছেন রামোস। হোয়াটসঅ্যাপে তাদের কথোপকথন ফাঁস করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
২০১৮ সালটি দারুণ কাটিয়েছিলেন রামোস। অধিনায়ক হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে দিয়েছেন নেতৃত্ব। যদিও রাশিয়ায় বিশ্বকাপটা ভালো কাটেনি তবু ক্যারিয়ারে প্রথমবার ব্যালন ডি’অর জয়ের সম্ভাবনা দেখছিলেন এই স্প্যানিশ। তাই সম্ভাবনাটা আরও বাড়াতে রুবিয়ালেসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রিয়াল অধিনায়ক।
ফাঁস হওয়া কথোপকথনে দেখা যায় রামোস রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির কাছে সাহায্য চাচ্ছেন, যেন তিনি তার জায়গাটাকে কাজে লাগিয়ে পরিচিত মহলে রামোসের হয়ে ব্যালন ডি’অর জয়ে সহায়তা চান। তিনি লেখেন: ‘শুভ সন্ধ্যা রুবিয়ালেস। আশা করছি, পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো আছো। তুমি জানো, আমি কখনো তোমার কাছে কিছুই চাইনি। তবে আজ আমি সেটি করতে চাচ্ছি।’
এরপর রামোস তার চাওয়াটুকু সরাসরিই জানিয়ে দেন তাকে। তিনি লেখেন, ‘আমি মনে করি, এ বছরটি আমার জন্য স্পেশাল ছিল এবং আমার পারফরম্যান্সও ভালো ছিল। আমি চাই, তোমার পক্ষে যতটা সম্ভব এবং উয়েফায় তোমার যত পরিচিত আছে তাদের মাধ্যমে আমাকে ব্যালন ডি’অর জিততে সাহায্য করো।’
রামোস মনে করতেন, এই পুরস্কারটি তিনি ডিজার্ভ করেন এবং তা স্প্যানিশ ফুটবলের জন্য দারুণ একটা বিষয় হবে। তাই তার হয়ে কাজটুকু করে দিলে যে তিনি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন তা-ও জানান। ‘(যদি তিনি করেন) আমি জীবনের বাকি সময় তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। এটি শুধু আমার জন্য নয়, স্প্যানিশ ফুটবলের জন্যও বড় পাওয়া হবে। আমি মনে করি, স্প্যানিশ ফুটবলও এটি ডিজার্ভ করে। তোমার জন্য অনেক ভালোবাসা।’ এভাবেই রামোস নিজের বক্তব্য শেষ করেন।
জবাবে অবশ্য রুবিয়ালেস তাকে খুব একটা ভরসা জোগাতে পারেননি। প্রত্যুত্তরে তিনি লেখেন: ‘হ্যালো সার্জিও! প্রথমত তোমাকে অভিনন্দন। সত্যিই দারুণ একটি বছর কাটিয়েছ তুমি। আশা করি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালেও ভালো খেলবে। তবে ব্যালন ডি’অরের ব্যাপারে কিছুই আমার হাতে নেই। তবে আমি যদি তোমাকে কিছু দিয়ে সাহায্য করতে পারি, সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পার।’
রুবিয়ালেসের কথায় কিছুটা আশাহত হলেও আশা ছাড়েননি রিয়াল মাদ্রিদের তৎকালীন অধিনায়ক। ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ফিফা সভাপতিকে প্রভাবিত করে ‘ফিফা বেস্ট’ পুরস্কারের জন্য তাকে মনোনীত করতে অনুরোধ করেন তিনি। তিনি লেখেন, ‘আমি জানি এগুলো তোমার হাতে নেই। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কেরও বড় প্রভাব থাকে। ইনফান্তিনো (ফিফা সভাপতি) দ্য বেস্ট পুরস্কার দেয়। এটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। যাই হোক, আমি তোমার সাহায্যের দিকে চেয়ে আছি। তুমি যেদিন চাও আমরা দেখা করব এবং মধ্যাহ্নভোজ সারব।’
উল্লেখ্য, সে মৌসুমে রামোস না পেলেও ব্যালন ডি’অর সেবার গিয়েছিল মাদ্রিদের ঘরেই। ক্রোয়েশিয়ান মায়েস্ত্র লুকা মদ্রিচ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে হারিয়ে জিতেছিলেন ব্যালন ডি’অর।
এল কনফিডেনশিয়াল এর আগে রিয়াল মাদ্রিদের বিভিন্ন খেলোয়াড়কে নিয়ে ক্লাবটির সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের বিতর্কিত বক্তব্য ফাঁস করেছিল। সে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, রাউল, প্রমুখকে নিয়ে তার মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলও। এ ছাড়া বার্সেলোনার ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকের ঘুষ কেলেঙ্কারিও ফাঁস করেছিল সংবাদমাধ্যমটি।