শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
N2N Online TV
সোমবার, ৬ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » এখনও কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে, রাসায়নিকের আরও চারটি কনটেইনার শনাক্ত
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » এখনও কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে, রাসায়নিকের আরও চারটি কনটেইনার শনাক্ত
১৩১ বার পঠিত
সোমবার, ৬ জুন ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

এখনও কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে, রাসায়নিকের আরও চারটি কনটেইনার শনাক্ত

---

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আরও চারটি কনটেইনার রয়েছে যেগুলোর মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল এ তথ্য জানিয়েছেন।

আজ (সোমবার) দুপুরে বিএম ডিপোর গেটে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

শনিবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটারের মতো দূরে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কনটেইনারগুলো দুমড়ে-মুচড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। পরপর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়।

এই কনটেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক থাকার কারণে সেখানে এতো বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আর এই রাসায়নিকের কারণেই আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

ডিপোতে থাকা চারটি কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকার বিষয়টি আমরা শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছি। এই কনটেনারগুলো ফায়ার সার্ভিসের দল বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে অপসারণ করার চেষ্টা করছে।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল

সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরোপুরি নেভানো যায়নি। আগুন নেভানোর নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ঘটনাস্থলে কাজ করছেন সেনাবাহিনী সদস্যরাও।

আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, ডিপোতে থাকা চারটি কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকার বিষয়টি আমরা শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছি। এই কনটেনারগুলো ফায়ার সার্ভিসের দল বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে অপসারণ করার চেষ্টা করছে। তাছাড়া ডিপোর ভেতরে এখনও কালো ধোঁয়া থাকায় সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সেখানকার আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সীতাকুণ্ডের এই ডিপোটি তৈরি করা হয় পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন আমদানি ও রপ্তানির কনটেইনার খালাস ও পরিবহনের জন্য। এমন একটি ডিপোতে রাসায়নিক মজুদ বা সংরক্ষণ করা হবে কেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু
আগুন ও বিস্ফোরণে ঠিক কতজন নিহত হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে ৪৬ জনের নিহত হওয়ার খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, আগুন নেভাতে গিয়ে তাদের ৯ জন সদস্য নিহত হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সংখ্যা ৪৯ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। পরে এর সংশোধনী দেওয়া হয়।
মাসের মধ্যে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে নমুনার ফলাফল দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন
সোমবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি কেয়ারের সামনে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে।

তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিস্ফোরণে নিহত অনেকের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাই তাদের পরিচয় শনাক্তে স্বজনদের ডিএনএ-এর নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আজ সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি কেয়ারের সামনে নমুনা সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ২৩ জনের লাশ শনাক্ত হয়েছে। বাকি ১৮ জনের আত্মীয়-স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। একমাসের মধ্যে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে নমুনার ফলাফল দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে ৪১ জনের লাশ এসেছিল বলে জানান তিনি।

তবে সেক্ষেত্রে বাকি পাঁচটি মরদেহের বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

তিন জনকে ঢাকায় নিতে হবে
সকালে দগ্ধদের দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
এখানে তিন জন রোগীকে আমরা চিহ্নিত করেছি যাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া উচিত। তাদের শরীর ফুলে যাচ্ছে।
ডা. সামন্ত লাল সেন
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডা. সামন্ত লাল সেন

দগ্ধ রোগীদের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে তিন জন রোগীকে আমরা চিহ্নিত করেছি যাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া উচিত। তাদের শরীর ফুলে যাচ্ছে। এই রোগীদের বার্ন আইসিইউ খুব জরুরি। যেটা চমেকে নেই। পরিবারের সদস্যরা রাজি থাকলে তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়া হাসপাতালটিতে কিছু রোগী আছে যাদের ছেড়ে দেওয়া যায়। তাদের চোখে সমস্যা হয়েছে। তাদের চোখের চিকিৎসক দেখাতে হবে।

চট্টগ্রামের বার্ন ইউনিটে মানুষকে ভিড় না করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ড়ের কারণে ইনফেকশন হতে পারে রোগীদের। ইনফেকশনের কারণে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

ডা. সামন্ত লাল বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা প্রথম ধাক্কাটা খুব ভালোভাবে সামলে নিয়েছে। ঘটনার পরদিন পিএম আমাকে মেসেজ করে চট্টগ্রাম যেতে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা আজ চট্টগ্রাম এলাম।

আগুন নিভতে আরও সময় লাগবে
আগুন লাগার পর প্রায় ৪০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও আগুন পুরোপুনি নেভার খবর পাওয়া যায়নি। আজ সকাল ৯ টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এখনও আগুন নেভানোর কাজ করছি। আগুন পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগবে।
নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও পুরোপুরি নেভানো যায়নি আগুন

তিনি বলেন, বিভিন্ন কনটেইনারে এখনও আগুন জ্বলছে, ধোঁয়া বের হচ্ছে। আমরা সাবধানতার সঙ্গে সেগুলোতে পানি দিচ্ছি। আর যেসব কনটেইনারের আগুনে কোনো ক্ষতি হয়নি সেগুলো নিরাপদে সরিয়ে দিচ্ছি। আমাদের ৯টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।



আর্কাইভ