সোমবার, ৩০ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » তামাক সেবন তথা ধূমপান, জর্দা ও গুলের ব্যবহার প্রাণঘাতী নেশা : প্রধানমন্ত্রী
তামাক সেবন তথা ধূমপান, জর্দা ও গুলের ব্যবহার প্রাণঘাতী নেশা : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তামাক সেবন তথা ধূমপান, জর্দা ও গুলের ব্যবহার প্রাণঘাতী নেশা। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
আগামীকাল ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২২’ পালিত হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘’তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তামাক চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবন পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৩০০টি সিগারেট তৈরির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ কাটা পড়ছে। তামাক চাষ ও তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করার জন্য প্রতিবছর গড়ে ২ লাখ হেক্টর বনজ সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী তামাক চাষের কারণে শতকরা ৫ শতাংশ হারে বন ধ্বংস করা হচ্ছে। তামাকজনিত কারণে ১৯৭০ সাল থেকে অদ্যাবধি ১৫০ কোটি হেক্টর (প্রধানত গ্রীষ্মমন্ডলীয়) বন বিলুপ্ত হয়েছে যা বার্ষিক ২০ শতাংশ গ্রিণহাউজ গ্যাস বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
গবেষণায় জানা গেছে, তামাক সেবনের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগ যেমন: হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীতে বছরে ৮০ লক্ষাধিক ও বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাক ব্যবহারকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার হ্রাস করার লক্ষ্যে ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ট্যোবাকো কন্ট্রোল’ (এফসিটিসি) প্রণয়ন করেছে। এফসিটিসি’র আলোকে ২০১৩ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫’-এর সংশোধন করা হয়েছে। জাতিসংঘ তামাককে উন্নয়নের হুমকি বিবেচনায় নিয়ে এফসিটিসির কার্যকর বাস্তবায়ন ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)’ প্রণয়ন করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টিকে ৭ম ও ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যুক্ত করেছে। সর্বোপরি, দক্ষিণ এশীয় স্পিকার্স সামিট ২০১৬-এ আমি আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছি। সে লক্ষ্যে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রয়োজন একটি সুস্থ-সবল জনগোষ্ঠী। এ জন্য মানুষকে ধূমপান ও তামাকের ভয়াল নেশা থেকে দূরে রাখতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকের ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে আনা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা। তামাক সেবনের কোনো সুফল নেই মানুষের কাছে এই বার্তা নিয়ে যেতে হবে। এজন্য সরকার, বেসরকারি সংগঠনসহ সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।”
তিনি ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।