শনিবার, ২১ মে ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ইস্পাত কারখানা
রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ইস্পাত কারখানা
মারিওপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় লুকিয়ে থাকা সবশেষ ইউক্রেনীয় সেনারাও আত্মসমর্পণ করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এমন দাবি করে।
এর মধ্য দিয়ে কয়েক মাস ধরে লড়াই চলা বন্দরনগরী মারিওপোলে বিজয় ঘোষণা করেছে রাশিয়া। এতদিন কারখানার বিশাল কমপ্লেক্সে ইউক্রেনীয় সেনারা লুকিয়ে ছিল। যে কারণে শহরটিতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করতে পারেনি রুশ বাহিনী।
রুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলেও মারিওপোল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শুক্রবার (২০ মে) মস্কোর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অবরোধের অবসান ঘটেছে। রাশিয়া এখন দোনবাস অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা জোরদার করেছে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইস্পাত কারখানায় লুকিয়ে থাকা সবশেষ যোদ্ধাদের বলা হয়েছে, তারা যাতে বের হয়ে নিজেদের জীবন রক্ষা করে।
রাশিয়া জানিয়েছে, এবার ৫৩১ ইউক্রেনীয় কারখানা থেকে বেরিয়ে এসেছে। আজভস্তাল ধাতুশিল্প স্থাপনার ভূখণ্ড পুরোপুরি মুক্ত করা হয়েছে। গেল কয়েক দিনে ২ হাজার ৪৩৯ প্রতিরোধ যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে।
তবে আত্মসমর্পণের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেনি ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ। লুহানস্ক প্রদেশে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত সবশেষ ভূখণ্ডটি দখলে নিতে বড় ধরনের হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
পূর্ব ইউক্রেনের দুটো অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। তার মধ্যে একটি লুহানস্ক। টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া এক বার্তায় লুহানস্কের গভর্নর সেরহি গাইডেই বলেন, সিভিয়ারোদোনেস্ক শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। গোলাবর্ষণ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না, কী পরিমাণ মানুষ হতাহত হয়েছে। এ বিষয়ে সঠিক ধারণা পাওয়া অসম্ভব। হতাহতের সংখ্যা তদন্ত করতে প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্টে যেতে হবে।’
মধ্য-এপ্রিল থেকেই ইউক্রেনের পূর্বাংশ থেকে সিভারেস্কি দোনেৎস নদীর ওপারে সিভিয়ারোদোনেস্ক ও তার জমজ শহর রিশচানস্ক দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে রুশ সামরিক বাহিনী। এর আগে রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয়ে পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছে মস্কো।
ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, সিভিয়ারোদোনেস্কে একটি হামলা প্রতিরোধ করা হয়েছে। সম্মুখসারিতে এটি রাশিয়ার বড় অভিযান ছিল।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যর্থ হলেও লুহানস্কে অগ্রসর হচ্ছে রুশ বাহিনী। বিশ্লেষকরা বলছেন, রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দাবি করা আরও ভূখণ্ড দখল করতে রুশ বাহিনীর বড় অগ্রগতি হয়েছে। এর আগে কিয়েভ দখলের চেষ্টা থেকে পিছিয়ে এসে দোনবাসে পুরোদমে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
লন্ডনভিত্তিক থিংকট্যাংক চাথাম হাউসের বিশেষজ্ঞ মাথিও বোলিগ বলেন, এই সংঘাতের পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এটি নির্ভর করছে, রাশিয়া কতটা কার্যকরভাবে সিভিয়ারোদোনেস্ক ও তার আশপাশের এলাকা দখল করতে পারে, তার ওপর।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু বলেন, দ্রুতই লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রকে মুক্ত করা হবে।
মারিওপোল অবরোধের অবসান রাশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী মুহূর্ত। দোনবাসের পরিস্থিতিকে ‘নরক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জেলেনস্কি। অঞ্চলটি রুশ বাহিনী পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।