বুধবার, ১৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম | স্বাস্থ্য » বাংলাদেশের করোনা নিয়ন্ত্রণের ‘মন্ত্র’ কাজে লাগাতে চায় বিশ্ব
বাংলাদেশের করোনা নিয়ন্ত্রণের ‘মন্ত্র’ কাজে লাগাতে চায় বিশ্ব
করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আমেরিকার থেকেও এগিয়ে আছে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের করোনা নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায়।
বুধবার (১৮ মে) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ অপথালমোলজি সোসাইটির (ওএসবি) ৪৯তম জাতীয় কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে রোল মডেল। আমাদের ভাবমূর্তি অনেক উন্নয়ন হয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আমেরিকার থেকেও এগিয়ে আছে। অন্য যে কোনো দিকে পিছিয়ে থাকলেও এ দিকে বাংলাদেশ তাদের থেকে এগিয়ে আছে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনাকালে আমাদের নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু আমারা করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছি। আমরা ৮৫০টি ল্যাব স্থাপন করেছি, স্বাস্থ্যখাতে ৩০ হাজার নতুন জনবল নিয়োগ দিয়েছি, সারাদেশে অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও হাসপাতালগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বের যে কোনো দেশের আগে টিকার ব্যবস্থা করেছি। এ সময়ে আমরা সাড়ে ২৯ কোটি টিকা সংগ্রহ করেছি, এর মধ্যে ২৬ কোটি টিকা মানুষকে প্রদান করেছি।’
করোনা নিয়ন্ত্রণের সুবিধা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনায় গত একমাসে একজনও মারা যায়নি। করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকায় আমাদের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি আজ ছয় শতাংশ। আমরা যে কোনো দেশে যেতে পারি, আমাদের করোনার সার্টিফিকেটও লাগে না।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘জাপানি সংস্থার জরিপে করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের ২০১টি দেশের মধ্যে আমরা পঞ্চম স্থানে রয়েছি, আর এশিয়ায় প্রথম। যেখানে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর অবস্থান অনেক নিচে।’
স্বাস্থ্যখাতে সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময়ের তুলনায় আমারা হাজার গুনে ভালো আছি। আমাদের স্বাস্থ্যখাতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। দেশে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছেছে। ইপিআই কর্মসূচি সারা বিশ্বে প্রশংসিত। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বিতরণের ফলে রাতকানা রোধ নির্মূল হয়েছে।
দেশের চক্ষু চিকিৎসা খাতের উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, ‘চক্ষু সেবায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। আমাদের দুইটি ইন্সটিটিউট রয়েছে। সেখানে উন্নতমানের চক্ষু চিকিৎসা প্রদান করা হয়। চোখের সেবার জন্য এখন আর বিদেশে যেতে হয় না। দেশেই আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদান করা হচ্ছে।’
উপজেলা পর্যায়ে মানুষ বিশেষজ্ঞ সেবা পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১০০টি উপজেলায় ভিশন সেন্টার আছে। পর্যায়ক্রমে সবকয়টি উপজেলায় করা হবে। অবকাঠামো, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী সবই দেওয়া হবে। তবে আমাদের জনবলে ঘাটতি আছে। আমাদের আরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এ সময় দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ও বিশেষজ্ঞ তৈরির লক্ষ্যে চারটি নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. আশরাফ সাঈদ বলেন, চক্ষু চিকিৎসার উন্নয়নে ওএসবি হাসপাতালকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সরকারের সহায়তার প্রয়োজন। দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসকের পদ বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের উচ্চ শিক্ষায় সিটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আশরাফ সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব সাইফুল হাসান বাদল, অপথালমোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।