রবিবার, ১ মে ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » নিজ নাগরিকদের হত্যা করছে ইউক্রেন: অভিযোগ রাশিয়ার
নিজ নাগরিকদের হত্যা করছে ইউক্রেন: অভিযোগ রাশিয়ার
দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে গোলাবর্ষণ করে নিজের বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত করছে ইউক্রেন। রোববার (১ মে) রাশিয়া এমন অভিযোগ করেছে
এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চল গুঁড়িয়ে দিচ্ছে রুশ সামরিক বাহিনী। এছাড়া মারিউপুলের আজভাস্তাইল ইস্পাত কারখানা থেকে বেসামরিক নাগরিকেরা নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর বলছে, ৯ সপ্তাহের সামরিক অভিযানে রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয়ে বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মনোযোগ দিয়েছে মস্কো। এ হামলায় ইউক্রেনের শহরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ লাখ ইউক্রেনীয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন।
রুশ সামরিক বাহিনী খেরসন দখল করার মধ্য দিয়ে অধিকৃত ক্রিমিয়া থেকে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে ১০০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে। আজভ সাগরের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপুলের অধিকাংশই এখন রুশ বাহিনীর দখলে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, খেরসনের কিসেলিভকা ও শিরোকা বারখা গ্রামে স্কুল, কিন্ডারগার্টেন ও সমাধিতে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। যদিও অভিযোগ প্রমাণে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
গেল ২১ এপ্রিল মারিউপুলে বিজয় ঘোষণা করেছে পুতিন বাহিনী। আজভাস্তাইল ইস্পাত কারখানায় কয়েক শ সেনা ও বেসামরিক নাগরিক এখনো লুকিয়ে আছেন। তাদের নিরাপদে বের করে নিয়ে আসতে একটি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শনিবার কারখানার ভেতরে থাকা ইউক্রেনীয় সেনারা বলেন, ২০ জনের মতো নারী ও শিশুকে রশি ব্যবহার করে সেখান থেকে বের করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
চার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত কারখানাটির ভেতরের ধ্বংসস্তূপের কথা উল্লেখ করে স্ভিয়াতোস্লাভ পলামার নামের এক যোদ্ধা বলেন, আমরা এখান থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বের করে দিতে পেরেছি। নারী-শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় একটি অস্ত্রবিরতিতে রুশ-ইউক্রেনীয়রা সম্মান দেখাচ্ছেন। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া নাগরিকদের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় ইউক্রেনীয় শহর জ্যাপোরিকজিয়ায় পাঠানো হবে বলে আশা করছি।
তবে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া নিয়ে জাতিসংঘ কিংবা রাশিয়ার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় ওডিসার প্রধান বিমানবন্দরের রানওয়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্রিমিয়া থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয় গভর্নর মাকসিম মারচেনকো। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বিমানবন্দরটি আর ব্যবহার করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী। তবে এটি পুনর্নির্মাণের অঙ্গীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শেষ রাতের দিকে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি বলেন, রাশিয়ার ব্যবহার ওডিসা কখনো ভুলবে না।
এ হামলা নিয়ে মস্কোর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ইউক্রেনের তৃতীয়-বৃহৎ শহরে থেমে-থেমে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। সম্প্রতি এক হামলায় সেখানের আট নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ক্রিমিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করতে অঞ্চলটিতে হামলা জোরদার করছে রাশিয়া। এখন তারা পূর্ব ইউক্রেনের পুরো দোনবাস অঞ্চলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যেতে লড়ছে। যদিও এরআগে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা লুহানস্ক ও দোনেৎসক অঞ্চলের বিভিন্ন অংশ দখল করে নিয়েছে।
এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলে আমাদের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নতুন হামলা চালাতে অতিরিক্ত সেনা জমায়েত করছে রাশিয়া। তারা দোনবাস অঞ্চলে হামলা আরও বাড়াতে চাচ্ছে।