শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
N2N Online TV
শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » রপ্তানি বহুমুখীকরণে সকল শিল্পখাতে সমান সুবিধা দিতে হবে
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » রপ্তানি বহুমুখীকরণে সকল শিল্পখাতে সমান সুবিধা দিতে হবে
২৬৭ বার পঠিত
শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রপ্তানি বহুমুখীকরণে সকল শিল্পখাতে সমান সুবিধা দিতে হবে

---

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তোরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রপ্তানি পণ্য বহুমূখীকরণ একান্ত জরুরি বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এজন্য তারা পণ্য বহুমুখীকরণ ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অল্প কয়েকটি খাতকে অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত না করে দেশের সব শিল্প খাতকে সমান সুযোগ সুবিধা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বাংলাদেশের রপ্তানির চ্যালেঞ্জ: বেসরকারিখাতের করণীয়’ বিষয়ক সেমিনারে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো.সিরাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রপ্তানি সহায়ক বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মামুন রশীদ, এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
এফসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন রপ্তানি সহায়ক প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে রপ্তানি খাত। তাই রপ্তানি সম্প্রসারণে সব খাতকে সমান সুবিধা দেয়া দরকার। এছাড়াও নবায়নের প্রয়োজনীয়তা ছাড়া স্থায়ী নিবন্ধন এবং কেবলমাত্র জমি,পরিবেশ, ইমারত, আগুন ও কর সনদের মাধ্যমে শিল্প স্থাপনের সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। একই সাথে বিডার সব ধরনের ওয়ানস্টপ সেবা চালু, রপ্তানি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাস্তায়নে ইপিবি, এনবিআর ও অন্যান্য প্রশাসনিক সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবি জানান।
জসিম উদ্দিন করমুক্ত নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ, প্রয়োজনীয় গ্যাসসহ পর্যাপ্ত জ্বালানী সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন,প্রধানমন্ত্রী নিজে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যকে ব্র্যান্ডিং করেন। প্রত্যেক বিদেশ সফরে তিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে যান। এলডিসি উত্তোরণের আগের চার বছর মোটেও কম সময় নয় উল্লেখ করে মুখ্য সচিব বলেন,বাংলাদেশ যে গতিতে এগোচ্ছে,তাতে এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার করা হিসাব পরিবর্তন করে দেবে। তিনি ভ্যাকসিন ক্রয় ও মেগা প্রকল্পগুলোতে কোন দূর্নীতি হয়নি বলে জানান।
বিশেষ অতিথিদের বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বিশ্বব্যাংক ব্যবসা সহজীকরণ সূচক প্রকাশ বন্ধ করলেও, দেশে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্ঠান। নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, ২০১৯ সালে চালুর পর থেকে ওয়ানস্টপ সার্ভিস থেকে বিডা সংশ্লিষ্ট ৫০ হাজারের বেশি সেবা দেয়া হয়েছে। দৈনিক গড়ে বিডার ১০০টি সেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে বিডার বাইরে থাকা ১৮টি সংস্থার মাত্র ৫৮টি সেবা যুক্ত হয়েছে। তিনি বিডার ওএসএস প্ল্যাটফর্ম থেকে সেবা গ্রহণ করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, এলডিসি উত্তরণের পরও যেন অন্তত ৬ বছর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাথে দর কষাকষি চলছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানি ও বাণিজ্য সক্ষমতা ধরে রাখতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিকল্প নেই বলে মনে করেন বাণিজ্য সচিব। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা জানান, এলডিসি উত্তরণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় খাতভিত্তিক উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সরকার গ্রহণ করছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাত যথেষ্ট বৈচিত্যপূর্ণ। দেশে প্রায় সব ধরনের পণ্যই উৎপাদিত হয়। কিন্তু এসব পণ্যকে রপ্তানি বাজারের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে।
সেমিনারের প্যানেল আলোচকরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি, সরবরাহ শৃঙ্খলা অব্যহত রাখা, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ফাইভ-জি, ব্রডব্যান্ড পৌছে দেয়া, শিল্পের সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ, প্রযুক্তি অভিযোজন ও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান। তিনি জানান, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জর মধ্যে পড়বে। যেগুলো হলো শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার হারানো, রপ্তানিতে ভর্তুকি বন্ধ করে দেয়া ও ট্রিপসের আওতায় সুযোগ সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর ফলে কানাডায় পোশাক রপ্তানিতে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ইউরোপের বাজারে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, জাপানে ৯ শতাংশ এবং কোরিয়ায় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে।
বাড়তি শুল্কের কারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, রপ্তানি কমতে পারে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, যার আর্থিক মূল্য ৬,৩৮০,৩০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মূল প্রবন্ধে এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবসার খরচ হ্রাস, কাস্টমসের সক্ষমতা বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।



আর্কাইভ