বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » গাজীপুর | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » বেতন-বোনাসের দাবিতে গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বেতন-বোনাসের দাবিতে গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা এলাকায় চলতি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে জায়ান্ট গ্রুপের তিন কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কের বেশ কয়েকটি গাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালায়।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মালেক খসরু এ বিষয়টি জানান।
ওসি মালেক খসরু জানান, গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা এলাকার জায়ান্ট গ্রুপের সফি প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেভিস গার্মেন্ট লিমিটেড ও জায়ান্ট নীট ফ্যাশনে দেড় সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করে। গত মার্চ মাসের শ্রমিকদের বেতন ভাতা নির্ধারিত তারিখ সোমবার (১১ এপ্রিল) পরিশোধ করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) কাজে যোগ দিতে শ্রমিকরা সকাল সোয়া ৭টার দিকে কারখানার গেটে এসে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তারা চলতি এপ্রিল মাসের বেতন ভাতাসহ ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে।
তিনি জানান, এ সময় তারা চলতি এপ্রিল মাসের বেতন ভাতা আগামী ১৫ এপ্রিল এবং ঈদ বোনাস ২০ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধের দাবি জানায়। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন ভাতা পরিশোধ এবং শ্রমিক অংশগ্রহণকারী (পার্টিসিপেন্ট) কমিটি বাতিলেরও দাবি জানান।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিতে পাশের কারখানাগুলোতে গিয়ে শ্রমিকদের আহ্বান জানিয়ে কারখানায় প্রবেশে বাধা দেয়। এ সময় তারা হাসান তানভীর ফ্যাশন লিমিটেড ও লিবাস নীটওয়্যার লিমিটেডসহ আশপাশের কয়েকটি কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা ঢাকা-গাজীপুর সড়কের বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করতে করতে চান্দনা চৌরাস্তার দিকে যেতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং পথচারীরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও ৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) মোখলেছুর রহমান মুকুল বলেন, শ্রমিকরা পূর্ব ঘোষণা ছাড়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে চলতি এপ্রিল মাসের বেতন এবং আসন্ন ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। শ্রমিকদের পাওনা সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।
ওসি মালেক খসরু জানান, এ ঘটনার পর দুপুরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবিসমূহ মেনে নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন ও আসন্ন ঈদ বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দেন। এ সময় শ্রমিক নেতারা বুধবার (১৩ এপ্রিল) থেকে সব শ্রমিকের কাজে যোগ দেওয়ার আশ্বাস দেন।