শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
N2N Online TV
বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » দক্ষিণ কোরীয়রা কেন এত ঘুমবঞ্চিত?
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » দক্ষিণ কোরীয়রা কেন এত ঘুমবঞ্চিত?
২৩৭ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দক্ষিণ কোরীয়রা কেন এত ঘুমবঞ্চিত?

---

পৃথিবীতে যেসব দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি ঘুমবঞ্চিত, তাদের একটি দক্ষিণ কোরিয়া। এতে দেশটির জনগণকে ব্যাপক খেসারত দিতে হচ্ছে। জি-ইউনের অফিসের সময় শুরু হওয়ার পর তিনি ঘুমের সমস্যায় পড়ে যান। খুবই ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে পড়ার পরেও বিশ্রাম নেওয়ার এতটুকু সুযোগ থাকছে না তার।

দিনের কর্মব্যস্ত সময়টিতেই তিনি অফিসের কাজে থাকেন। কাজের চাপ থাকলে কোনো কোনো দিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অফিসে থাকেন। ২৯ বছর বয়সী এই জনসংযোগ কর্মকর্তাকে কখনো-কখনো রাত তিনটা পর্যন্ত অফিসে কাটাতে হয়।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গভীর রাতে ডেকে এনে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করে দিতে তাকে অনুরোধ করেন। এই নারী বলেন, বিশ্রাম কী জিনিস, এতদিনে তা আমি ভুলে গেছি।

রাজধানী সিউলের গ্যাংনাম জেলার ড্রিম স্লিপ ক্লিনিকের মনোযোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জি-হাইউন লি বলেন, তার কাছে যারা আসেন, তাদের অনেকে ৩০টি ঘুমের বড়ি খাচ্ছেন।

এই ঘুম বিশেষজ্ঞ বলেন, সচরাচর ঘুম পাড়তে অনেক বেশি সময় লাগে। কিন্তু কোরীয়রা দ্রুত ঘুমাতে চাচ্ছেন, যে কারণে তাদের ওষুধ খেতে হচ্ছে। ঘুমের ওষুধের প্রতি আসক্তি এখন তাদের জাতীয় মহামারি হয়ে গেছে।

যদি ঘুমবঞ্চনা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো সরকারি পরিসংখ্যান নেই। বলা হচ্ছে, লাখখানেক কোরীয় নাগরিক এই ঘুমের বড়িতে আসক্ত। ঘুমাতে না-পারায় তারা অ্যালকোহল সেবন করছেন। এতে তাদের আরও বিপজ্জনক পরিণত সইতে হচ্ছে।

ডা. লি বলেন, ঘুমের মধ্যে লোকজন হেঁটে রেফ্রিজারেটর খুলে অবচেতনে অনেক কিছু খেয়ে ফেলছেন। যার মধ্যে রান্না করা হয়নি, এমন খাবারও রয়েছে। স্বপ্নচারী রোগীদের কারণে সিউলের কেন্দ্রবিন্দুতে সড়ক দুর্ঘটনাও হচ্ছে।

ক্রমাগত অনিদ্রারোগী দেখে আসছেন এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। তাদের মধ্যে কয়েকজন রোগী জানিয়েছেন, কয়েক দশকেও তারা রাতে অল্প কয়েক ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারছেন না। তারা কান্না করছেন। এটি খুবই খারাপ পরিস্থিতি।

দক্ষিণ কোরিয়ার লোকজন কেবল ঘুমবঞ্চিতই না, তাদের মধ্যে আত্মহত্যার গড়ও অনেক বেশি। উন্নত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায়ই বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন। তারা অনেক বেশি কড়া মদ পান করেন। মানসিক বিষণ্ণতা তাড়াতে ওষুধ খাওয়ার সংখ্যাও কোরিয়ায় বেশি।

অল্প কয়েক বছরের মধ্যে কোরিয়া বিশ্বের একটি দরিদ্র দেশ থেকে প্রযুক্তিগত সবচেয়ে উন্নত দেশে রূপ নেয়। ইতিমধ্যে তারা উল্লেখযোগ্য সফট পাওয়ারের অধিকারী হয়েছেন। তাদের পপ গান বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়।

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো তাদের কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই। কেবল সমন্বিত জাতীয়তাবাদ ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা একটি উন্নত জাতিতে পরিণত হয়েছেন। এতে নাগরিকদের অতিরিক্ত সময় খাটতে হচ্ছে। অব্যাহত মানসিক চাপ ও ঘুমবঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারা।

মানুষকে ঘুমে সহায়তা করতে সেখানে বিশাল শিল্প গড়ে উঠেছে। দেশটির ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলো বিভিন্ন ঘুমপণ্যে ভরে থাকে। স্টোরগুলোতে যেমন থাকে ঘুমের অনুকূল বালিশ, তেমনই ফার্মাসিতে থাকে ভেষজ ওষুধ ও টনিক। এছাড়া মেডিটেশনের সহায়তায় বিভিন্ন অ্যাপ রয়েছে। যেগুলো ব্যবহার করে লোকজন ঘুম পাড়তে চেষ্টা করেন।



আর্কাইভ