শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
N2N Online TV
শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » রাশিয়া সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » রাশিয়া সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য
১৩০ বার পঠিত
শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রাশিয়া সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য

---

সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন এই দুটি দেশের দিকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে স্পর্শকাতর অধ্যায়, যার প্রভাব পড়তে পারে সারা বিশ্বে। ১৯৯১ সালে বিশাল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ও বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিসহ বিভিন্ন অঙ্গনে স্বতন্ত্র অবস্থানে বহাল আছে রাশিয়া। এ ছাড়া দেশটির সভ্যতা ও সংস্কৃতির উত্তরোত্তর ক্রমবিকাশে সমগ্র ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের ওপর এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব আছে। সেই সূত্রে এই নিবন্ধটিতে রাশিয়ার বিস্ময়কর কিছু তথ্যের দিকে আলোকপাত করা হয়েছে।
রাশিয়া সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য

পৃথিবীর দীর্ঘতম রেলপথ

ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে মস্কো ও সুদূর পূর্ব রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরাসরি পাড়ি দিয়েছে ৯ হাজার ২৫৯ কিলোমিটার রেলপথ। উরাল পর্বতমালা, সাইবেরিয়ার বার্চ বনও বৈকাল হ্রদ অতিক্রম করতে এই যাত্রাটি সময় নেয় ছয় দিন।

পৃথিবীর বৃহত্তম দেশ

ভূমির আয়তনের দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। রাশিয়ার মোট ভূমির ক্ষেত্রফল ৬৬ লাখ এক হাজার ৬৭০ বর্গমাইল, যা পৃথিবীর মোট ভূমির শতকরা ১১ ভাগের সমান। এত বড় দেশ হওয়াতে এখানে বৃক্ষের আধিক্য দেখা যায়। পৃথিবীর শতকরা ২০ ভাগ গাছ আছে শুধু এই রাশিয়াতেই। সংখ্যার দিক থেকে তা প্রায় ৬৪০ বিলিয়নের সমান।

পৃথিবীর গভীরতম হ্রদ

সাইবেরিয়ায় অবস্থিত বৈকাল হ্রদ বিশ্বের বৃহত্তম মিঠাপানির হ্রদ। শুধু এই একটি হ্রদ সারা বিশ্বের মিঠাপানির শতকরা ২৩ ভাগ ধারণ করে।

বিশ্বের শীতলতম গ্রাম

রাশিয়ার ওয়ম্যাকন গ্রামটিতে শীতকালে গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। ওয়ম্যাকনে সর্বশেষ রেকর্ডকৃত শীতলতম তাপমাত্রা পাওয়া গেছে মাইনাস ৯৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। সেখানে বাইরে বেরিয়ে কেউ চশমা পরলে তার চোখের ওপরেই চশমা জমে বরফ হয়ে যায়। এ ছাড়া গাড়ি রাখার গ্যারেজগুলোকেও বেশ উত্তপ্ত থাকতে হয়। রাশিয়ার ইয়াকুটস্ক থেকে ওয়ম্যাকনে দুই দিনের গাড়ির পথ।

মহাকাশে প্রথম মানুষ

১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহাকাশ ভ্রমণ করেন ইউরি গ্যাগারিন। ভস্টক-১ মহাকাশযানে চড়ে ১০৮ মিনিটের কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করেছিলেন এই রাশিয়ান কস্মোনট।

নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ

রাশিয়ায় নারীদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫৪ ভাগ এবং পুরুষদের সংখ্যা শতকরা ৪৬ ভাগ। জনসংখ্যার এই ব্যবধানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনেকাংশে দায়ী। সে সময় যুদ্ধে মারা গিয়েছিল ২৫ মিলিয়ন রাশিয়ান সৈন্য। এখন যুদ্ধ না চললেও নারীদের তুলনায় পুরুষদের আয়ুষ্কাল আগের থেকে অনেক কম। পুরুষরা সাধারণত নারীদের তুলনায় এখানে ১০ বছর কম বাঁচে। এর পেছনে রাশিয়ান পুরুষদের ঘন ঘন দুর্ঘটনা, অধিক পরিশ্রমের কারণে স্বাস্থ্যের দুর্বলতা দায়ী।

বিশ্বের দীর্ঘতম এস্কেলেটর

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রোর গভীর ভূগর্ভস্থ স্টেশনগুলোতে দীর্ঘ এস্কেলেটর স্থাপন করা আছে। প্লোশচাদ লেনিনা, চেরনিশেভস্কায়া, ও অ্যাডমিরালটেইস্কায়া স্টেশনের এস্কেলেটরগুলো ৪৫৩ ফুট লম্বা এবং ২২৬ ফুট উচ্চতার। এগুলো দিয়ে ওপর থেকে নিচে যেতে বা নিচ থেকে ওপরে আসতে প্রায় আড়াই মিনিট সময় লাগে।

পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত স্থান

দক্ষিণ উড়াল পর্বতমালার লেক কারাচে বিশ্বের অন্যতম দূষিত স্থান। ১৯৫০-এর দশকে এখানে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ফেলা হতো। এই বর্জ্যের মধ্যে অধিকাংশ পদার্থ ছিল নিকটবর্তী মায়াক পারমাণবিক কেন্দ্রের বর্জ্যসমূহ। কারাচে হ্রদ থেকে নির্গত বিকিরণ এক ঘণ্টার মধ্যে যে কোনো মানুষকে মেরে ফেলতে পারে।

দাড়ির ওপর কর আরোপের আইন

১৬৯৮ সালে রাশিয়ার সম্রাট পিটার প্রথম রাশিয়ান সমাজকে পশ্চিম ইউরোপীয় মডেলের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে দাড়ির ওপর কর আরোপ করেছিলেন। দাড়ির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য জার (সম্রাট বংশ) পুলিশদের মাধ্যমে নাগরিকদের থেকে কর আদায় করা হতো। কেউ কর দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে প্রকাশ্যে তার দাড়ি কামিয়ে দেওয়া হতো।

রাশিয়ানরা সদা হাস্যোজ্জ্বল নয়

উন্নত দেশগুলোর সংস্কৃতিতে অপরিচিতদের মধ্যেই হাসিখুশি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ভাব বিনিময় দেখা যায়। কিন্তু রাশিয়ানদের কাছে হাসি দুর্বলতার লক্ষণ; কেননা এতে নিজের ভেতরের সত্যিকারের অনুভূতি প্রকাশ পেয়ে যায়। রাশিয়ানরা শুধু পরিচিতদের সঙ্গেই হাস্যোজ্জ্বল থাকে। রাস্তা দিয়ে কোনো পথচারিকে পাশ কাটানোর সময় তাকে দেখে হাসাটা রাশিয়ানদের কাছে অদ্ভূত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিরর্থক। তাই কোনো পথচারী রাশিয়ানের দিকে তাকিয়ে হেসে বিনিময়ে হাসি পাওয়াটা বোকামি; এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

শেষাংশ

পৃথিবীর ইতিহাস বিনির্মাণে স্বাক্ষর রাখা দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। পাশাপাশি স্বকীয়তা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশটি বিদ্যমান ভৌগোলিক সীমারেখায় সমৃদ্ধির সঙ্গে নিজের পরিচিতির জানান দিয়ে গেছে। যুগে যুগে বিভিন্ন ধরনের নেতৃত্ব দেশটির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনে অবদান রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে ভারী হয়ে ওঠা হাওয়া বদলের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাপনা পৃথিবীর একটি বিরাট অংশকে অনাকাঙ্ক্ষিত দিকে ঠেলে দিতে পারে।



আর্কাইভ