শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | শিরোনাম | সিলেট » প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসঙ্গে দেখে ফেলায় শিশুকে হত্যা
প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসঙ্গে দেখে ফেলায় শিশুকে হত্যা
প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসঙ্গে দেখে ফেলা এবং বিষয়টি প্রেমিকার মাকে জানিয়ে দেওয়ার কারণে ৯ বছরের শিশু লিজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখা হয়। হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তিন আসামিকে গ্রেফতারের পর তারা আদালতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হবিগঞ্জ পিবিআইয়ের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার।
তিনি জানান, গত বছরের ২১ জুলাই ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের মো. সাগর আলীর মেয়ে লিজা আক্তারকে (৯) তার মা সেলিনা বেগম প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য সামগ্রী আনতে গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাজারে পাঠান। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও সে ফিরে আসেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে ওইদিন রাতেই শিশু লিজার বাবা সাগর আলী মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
নিখোঁজের চার দিন পর গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে লিজার অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান এক নারী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। রাতে লিজার বাবা সাগর আলী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মাধবপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। পরে পিবিআইয়ের সদস্যরা তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গত ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবদ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসবাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন তারা। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের আদালতে হাজির করলে বাহার ও তাজরীন হবিগঞ্জের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমুর সরকারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আসামিরা আদালতকে জানান, গ্রেফতার তাজরীনের ছোট ভাই তাকবীর হাসানের সঙ্গে প্রতিবেশী কিশোরী শান্তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাধে তারা দুজন প্রায়ই দেখা-সাক্ষাৎ করত। হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে সন্ধ্যায় শান্ত ও তাকবীর দেখা করার সময় শিশু লিজা তাদেরকে একসঙ্গে দেখে ফেলে এবং বিষয়টি সে শান্তার মাকে জানিয়ে দেয়। এরপর শান্তার মা শান্তাকে গালিগালাজ করেন এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। এতে তাদের প্রেমের সম্পর্কে ছিন্ন হওয়ার পথে চলে যায়।
রাগে ও ক্ষোভে লিজাকে শায়েস্তা করার সুযোগ খুঁজতে থাকে শান্তা ও তাকবীর। গত বছরের ২১ জুলাই ঈদুল আজহার দিন সন্ধায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে লিজাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায় ঘাতকরা। এ সময় তারা লিজাকে গলা টিপে হত্যা করে বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখে।
হবিগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার বলেন, হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।