রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » সংবাদপত্রের করপোরেট কর ১০-১৫% করার প্রস্তাব নোয়াবের
সংবাদপত্রের করপোরেট কর ১০-১৫% করার প্রস্তাব নোয়াবের
সংবাদপত্রের করপোরেট কর ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। অন্যদিকে স্যাটেলাইট টিভির নেটওয়ার্ক ডিজিটাইজ করতে প্রয়োজনীয় সেট-টপ বক্সের আমদানিতে কর রেয়াত চেয়েছে বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)।
রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলনকক্ষে আগামী অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন গণমাধ্যম মালিকদের এই দুটি সংগঠনের নেতারা।
আলোচনাসভায় নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ সংবাদপত্রশিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল সংবাদপত্রকে সেবা শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এই শিল্প বিশেষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না।
এদিকে তৈরি পোশাক শিল্প একটি মুনাফা অর্জনকারী শিল্প হওয়া সত্ত্বেও এর করপোরেট কর ১০ থেকে ১২ শতাংশ। সংবাদপত্র সেবা শিল্প হওয়া সত্ত্বেও করপোরেট কর ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ এই শিল্পের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও আর্থিক অবস্থা অন্য আট-দশটি প্রতিষ্ঠানের মতো নয়। তাই সংবাদপত্রের করপোরেট কর ১০-১৫ শতাংশ করা জরুরি।
তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্রের কাঁচামাল নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে অনেক পণ্যই ভ্যাটমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। তাই সংবাদপত্রশিল্পের কাঁচামাল আমাদনির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাটমুক্ত সুবিধা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ‘
নোয়াবের সভাপতি আরো বলেন, ‘সরকারিসহ সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নিজের আয়কর নিজে প্রদান করেন। অথচ সংবাদপত্র ওয়েজ বোর্ড অনুসারে কর্মীর আয়ের ওপর প্রযোজ্য আয়কর প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করতে হয়। সংবাদপত্রের ওয়েজ বোর্ডের ক্ষেত্রেও এই আয়কর অধ্যাদেশ প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ‘
এদিকে সংবাদপত্র ওয়েজ বোর্ডে বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের ৭০ শতাংশ। আর আয়কর অধ্যাদেশে বাড়ি ভাড়া ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করমুক্ত রেয়াত হওয়ায় অবশিষ্ট ২০ শতাংশ ব্যক্তি খাতের করের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই মূল বেতনের ৫০ শতাংশর স্থলে বাড়ি ভাড়া ৭০ শতাংশ করমুক্ত করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সংবাদপত্রশিল্পকেও সরকারঘোষিত প্রণোদনার আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
নোয়াবের সদস্য ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘এই কভিডের সময় দেশের মিডিয়াগুলো কিভাবে সেবা করছে, স্বাস্থ্যবিধি প্রচার থেকে শুরু করে কিভাবে সরকারের কাজ আরো বেশি ঘনিষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে, কোথায় ত্রুটি হচ্ছে, কোথায় আরো সেবামূলক কাজ হতে পারে এ সমস্ত ব্যাপারে টেলিভিশন ও নিউজপেপারের অবদানগুলো আপনারা নতুন চোখে দেখবেন। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে কিন্তু আমরা নিউজপেপারগুলো একটি টাকাও পাইনি। আয়করের ব্যাপারে বাংলাদেশের কোনো শিল্প নেই যেখানে কর্মীদের আয়কর সেই প্রতিষ্ঠান দেয়। কেন আমরা এমন একটি জায়গায় যাব, যা সমস্ত দেশ থেকে ভিন্ন?’
বিজ্ঞাপনের ওপর উৎসে কর টেলিভিশন নয়, বিজ্ঞাপনদাতাকেই দিতে হবে―এমন দাবি তুলেছে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো। অ্যাটকো বিদেশি চ্যানেলে দেওয়া বিজ্ঞাপনের অর্থ পরিশোধের মাধ্যম খতিয়ে দেখার আহ্বাবানও জানায়। খেলার সময় টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের বাজারের অস্থিরতাও পর্যালোচনার দাবি করে সংগঠনটি।
আ্যটকোর সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘সামাজিক দায়িত্ব পালনসহ রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে গণমাধ্যম। কিন্তু ট্যাক্স-ভ্যাট অন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মতোই দিতে হয় টেলিভিশন-সংবাদপত্রগুলোকে। ‘
গণমাধ্যম মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে করপোরেট ট্যাক্স এবং নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানান তিনি।
নোয়াব ও অ্যাটকোর বিভিন্ন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা সমাজসেবা বা সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ করে তাদেরকে আমরা সব সময় বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকি। মিডিয়াও সমাজ উন্নয়নে কাজ করে। তাই এ দাবিগুলোও পর্যালোচনা করা হবে। তবে বিশেষভাবে করপোরেট করের বিষয়টি আমরা দেখব। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘কর প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে অটোমেশন করা হচ্ছে। এতে সব কিছু নিয়মমাফিক চলবে। শিগগিরই করদাতারা অটোমেশনের সুবিধা পাবেন। ‘