বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » মাটির নিচে লুকিয়ে আছে একটি শহর!
মাটির নিচে লুকিয়ে আছে একটি শহর!
তুরস্কের মধ্য আনাতোলিয়ার কাপাদোশিয়ায় অবস্থিত ভূগর্ভস্থ শহর ডেরিংকুয়ো। ২৮০ ফুট গভীরে অবস্থিত শহরটির ছিল ১৮টি স্তর।
স্কুল, গির্জা, বাড়িঘর, কবরসহ একটি সম্পূর্ণ শহর। ১৯৬৩ সালে একটি বাড়ি মেরামতের সময় আবিষ্কৃত হয় মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা শহর ডেরিংকুয়োর। অগ্ন্যুৎপাতের জন্য বিখ্যাত ছিল তুরস্কের আনাতোলিয়ার কাপাদোসিয়া এলাকাটি।
সব এলাকা ডুবে ছিল ছাই ও লাভায়। পরবর্তীতে তা রূপ নেয় নরম শিলায়। আনাতোলিয়ার প্রাচীন অধিবাসীরা এই শিলা খোদাই করে সেখানে ঘরবাড়ি নিমার্ণ করা শুরু করেন। কাপাদোসিয়াতে মাটির নিচে এমন বহু স্থাপনা খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে, এর মধ্যে সব থেকে গভীরতম বিবেচনায় ডেরিংকুয়ো প্রথম।
খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ থেকে ১৬০০ অব্দে আনাতোলিয়ায় ‘হিত্তিতি’দের রাজত্ব ছিল। নানা দ্বন্দ্ব ও যুদ্ধের ফলে এই সাম্রাজ্যটি ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে বলকান থেকে ফ্রিজিয়ানদের আগমন ঘটে।
অনেকের ধারণা ফ্রিজিয়ানদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে হিত্তিতিরা নির্মাণ করেছিলেন মাটির নিচে ডেরিংকুয়ো নামের এই শহরটি। এখানকার মাটির নিচের ঘরগুলোর প্রবেশের মুখগুলো কুয়ার মতো হলেও নিচে যথেষ্ট প্রশস্ত।
গবাদিপশুর যাতায়াতের জন্য ছিল সুড়ঙ্গ। গবেষকদের মতে, কাপাদোসিয়াতে ভূগর্ভস্থ শহরের সংখ্যা প্রায় হাজারের কাছকাছি। পাথরের নরম শিলা খোদাই কের তৈরি করা হয়েছিল এই শহরটি। বহু সুরঙ্গজুড়ে শহরটি বিস্তৃত।
এই সুরঙ্গ পথগুলো যুক্ত করেছে খোদাইকৃত বিভিন্ন গুহাকে। প্রায় ১০ হাজার মানুষের আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল এখানে। মাটির নিচের এই শহরে প্রবেশের প্রতিটি দ্বার বন্ধ করা থাকত প্রায় ৫ ফুট চওড়া ও ৫০০ কেজি ওজনের গোলাকার পাথরের দরজা ব্যবহার করে।
ডেরিংকুয়োর বর্তমান অবস্থার কথা বলতে গেলে জানা যায়, শহরটি ১৯৬৯ সাল থেকে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলেও গোটা শহরের মাত্র ১০ ভাগ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
পৃথিবীর নানা দেশ থেকে আগত পর্যটকরা প্রতিনিয়ত মানব সভ্যতার এই অন্যন্য নিদর্শন দেখতে আসেন। সেখানকার পাথরের দেয়াল স্পর্শ করলে হাজার হাজার বছর আগের এই শহরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের আভাস মিলে।