মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » তিতাস নদীর পাড়ে নির্মিত হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর স্বপ্নের ডিসি পার্ক
তিতাস নদীর পাড়ে নির্মিত হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর স্বপ্নের ডিসি পার্ক
জেলায় চিত্তবিনোদনের জন্য কোন পার্ক নেই। ভ্রমণ প্রিয়দের ছুটতে হয় রাজধানী ঢাকাসহ নরসিংদী, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, সিলেট, কক্সবাজার, কিংবা পার্বত্য তিন জেলায়।
সদরের মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন ডিসি পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ এলাকায় তিতাস নদীর পাড়ে নির্মিত হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর স্বপ্নের ডিসি পার্ক।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য কোন পার্ক নেই। শহরের মৌড়াইল এলাকায় ফারুকী পার্ক নামে একটি ছোট পার্ক থাকলেও এটিতে শিশুদের খেলার জন্য আধুনিক কোন রাইডার বা খেলনা নেই। গত প্রায় একযুগ আগে শহরের দাতিয়ারা এলাকায় একটি শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি শিশু পার্কটি। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি পার্ক নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ফোরামে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলো শহরবাসী। দাবির প্রেক্ষিতে একটি ডিসি পার্ক নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন বিদায়ী জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন। শুরু হয় পার্ক নির্মাণের জন্য জায়গা খোঁজা। জেলার সদর উপজেলার সেন্দ এলাকায় ১৮ একর জায়গা বিভিন্নভাবে বেদখল হয়েছিল। সরকারি খাস খতিয়ানে থাকা এসব বেদখল জায়গা উদ্ধার করেছে প্রশাসন। পার্কের জায়গাটি তিতাস নদীর পাড়ে অবস্থিত। তিতাস নদী ঘিরে এই জেলার নানান পরিচয়। ফলে বহুদূর দূরান্ত থেকে ভ্রমণ পিয়াসুরা তিতাস নদী দেখতে আসেন। নির্ধারিত কোন পার্ক কিংবা স্থাপনা না থাকায় মন খারাপ করে চলে যেতে হয়। গত দুইবছর ধরে চলে পার্কের নির্মাণ কাজ। ইতিমধ্যেই পার্কের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে ডিসি পার্ক। ইতিমধ্যেই জায়গাটির চারিদিকে সীমানা পিলার বসিয়ে তার কাঁটার বেড়া দেয়া হয়েছে। প্রবেশদ্বারে নির্মিত হয়েছে একটি গেইট। পার্কের মধ্যে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ৭ হাজার গাছ। যাতে রাতে পাখিরা বসতে পারে। কথা হয় স্থানীয় সৈকত হোসেন ও আরিফুল ইসলামের সাথে। তারা জানান, এটি আমাদের জন্য খুশির খবর। ঘুরার কোন জায়গা নাই। ফলে দ্রুত তারা এই ডিসি পার্কটি নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানান। নারী সংগঠক এ্যাড. তাসলিমা সুলতানা নিশাত জানান- এই জেলায় সবই আছে। কিন্তু একটু বিনোদনের জন্য তেমন কিছু নাই। ফলে বিদায়ী জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগ বেশ চৎমকার। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিও জানান, তিতাস নদী ঘিরে জেলার পরিচিতি। আর এই নদীর পাড়ে হচ্ছে এই ডিসি পার্ক। এই সময় তিনি আরও বলেন- আমাদের চিত্ত বিনোদনের জন্য কোন জায়গা নাই। এই পার্ক নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনকে সব সময় মনে রাখবে এই জেলার মানুষ।
এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, জেলায় সৌন্দর্য্য উপভোগ করার কোনো জায়গা নেই। মানুষের বিনোদনের জায়গা দরকার। তিতাস নদীর পাড়ে এই ডিসি পার্কটি হওয়ায় সবার ভাল লাগবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন বছরে এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য একটি উপহার। তিনি বলেন, এই ডিসি পার্কটি আপনাদের কাছে সমর্পণ করে দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি আপনাদের তত্ত্বাবধানে এটি সম্পূর্ণরূপে মানুষের জন্য ইতিবাচক একটি ফলাফল বয়ে আনবে। পার্কের ভেতরে আছে তিনটি পুকুর। মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে একটি ভবন। আছে বিশাল মাঠ। পার্কের দক্ষিণ পাশে একটু দূরেই আছে তিতাস নদী। আমি শুরু করে গেলাম। পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যারা আসবেন তারা পার্কটি সৌর্ন্দয্যবর্ধনের কাজ করবেন। পার্কটির কাজ শেষ হলে ভ্রমণ পিয়াসুরা এখানে এসে রাতের বেলা জোৎস্না দেখতে পারবেন। তিতাসের পাড়ে গিয়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। তিনি বলেন, শহর থেকে লোকজন যাতে গাড়ি নিয়ে সহজে এখানে আসতে পারেন সেজন্য ইতিমধ্যেই এলজিইডির পক্ষ থেকে সামনের রাস্তা সংস্কারের টেন্ডার করা হয়েছে।