রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » আইন আদালত | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম | সিলেট » ডিআইজি প্রিজনস পার্থের রায় আজ
ডিআইজি প্রিজনস পার্থের রায় আজ
বরখাস্ত হওয়া সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও মানিলন্ডারিং (অর্থপাচার) আইনে করা মামলার রায় ঘোষণা আজ।
রোববার (৯ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম বেলা ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করবেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রায়ে পার্থ গোপালের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছে।
তার বিরুদ্ধে করা মামলার ধারাগুলোর মধ্যে মানিলন্ডারিং আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। অন্যদিকে পার্থ গোপালের আইনজীবীর প্রত্যাশা, আইনগতভাবে খালাস পাবেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য রোববার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় বিভিন্ন সময় ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
দুদক আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ঘুষগ্রহণ ও মানিলন্ডারিং আইনে করা মামলায় পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।
পার্থ গোপালের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মামলা করা হয়েছে, আইনগতভাবে তিনি তা থেকে খালাস পাওয়ার যোগ্য।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পার্থ গোপাল বণিককে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে অভিযানে যায় কমিশন। ওইদিন বিকেলে ধানমন্ডির ভূতের গলিতে পার্থ গোপালের ফ্ল্যাট থেকে নগদ ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে দুদক। এর পরই আটক করা হয় তাকে। পরদিন ২৯ জুলাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ধারায় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করে দুদক।
এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ থেকে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ৪ নভেম্বর সাবেক ডিআইজি পার্থের বিচার শুরু হয়। ঘুষ গ্রহণ ও মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ওইদিন ঢাকার বিশেষ জজ-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ওই বছরের ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
এরপর পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। গত বছরের ২৪ আগস্ট দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন সংশ্লিষ্ট আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, উপমহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিক (বরখাস্ত) সরকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেন। এসব টাকা গোপন করে তার নামীয় কোনো ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে বিদেশে পাচারের উদ্দেশে নিজ বাসস্থানে লুকিয়ে রেখে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অবশ্য ডিআইজি পার্থ দাবি করেছেন, ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা শাশুড়ি দিয়েছেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা সারা জীবনের জমানো।