বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আলোচনা করতে ইতিবাচক যুক্তরাষ্ট্র : মোমেন
নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আলোচনা করতে ইতিবাচক যুক্তরাষ্ট্র : মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান কয়েতজন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
তিনি রাজধানীতে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমীতে এক ব্রিফিংকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনী ব্লিংকেনের সাথে তার গতকাল সন্ধ্যার ফোনালাপের ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আলোচনা করবো। তিনি আমাকে বলেছেন যে, ‘আগামী বসন্তে, আমি (ব্লিংকেন) আশা করি আপনি এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন আসবেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আলোচনা করতেই ফোন করেছিলেন এবং ব্লিংকেনের কণ্ঠে ইতিবাচক ইঙ্গিতটি তার ভাল লেগেছে ।
ড. মোমেন বলেন, ‘তিনি খুবই ইতিবাচক ছিলেন। তিনি যেভাবে কথা বলেছেন- তা আমার খুব ভাল লেগেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্লিংকেন তাকে বলেছেন যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শন্তিরক্ষাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একসাথে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি- (নিষেধাজ্ঞা জারির আগে) আপনারা আমাদের সাথে আলোচনা করতে পারতেন। যেমন আপনাদের সঙ্গে আমাদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
মোমেন বলেন, জবাবে ব্লিংকেন বলেছেন- আপনিও (মোমেন) আমাকে কল করতে পারেন। আমাকে (ব্লিংকেন) কল করতে সঙ্কোচ করবেন না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্লিংকেনকে বলেছেন যে, বাংলাদেশীরা এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টিকে পছন্দ করেনি। ‘আমি তার কাছে এ ব্যাপারে দেশের মানুষের মনোভাব তুলে ধরেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন যে, ওয়াশিংটনের সাথে আমাদের ৫০ বছরের অত্যন্ত আস্থার ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় বাংলাদেশের জনগণ যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত পছন্দ করেনি।
মোমেন বলেন, ‘আমরা আলোচনার মাধ্যমেই আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে সব ইস্যুর সমাধান করি। তাই আমরা আশা করি যে, আপনারা (যুক্তরাষ্ট্র) যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমাদেরকে অবহিত করবেন।’
র্যাবকে একটি সুশৃঙ্খল ও দুর্নীতিমুক্ত বাহিনী হিসেবে অভিহিত করে ড. মোমেন ব্লিংকেনকে বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে র্যাবের দক্ষতার কারণেই হলি আর্টিজেনে জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশে আর কোন জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি এবং এই এলিট ফোর্সের ওপর দেশের জনগণের আস্থা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসবাদ, মাদক ও মানব পাচার হ্রাসে র্যাবের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এসব ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। ‘তাই আমি তাকে আরো বলেছি, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দুর্ভাগ্যজনক।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, তিনি কোন নিদিষ্ট তারিখের মধ্যে প্রত্যাহার করার জন্য সরাসরি আবেদন জানাননি। তবে এই সমস্যা সমাধানে আলোচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক রয়েছে। মাকির্ন কংগ্রেসের কারনে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
টেলিফোন সংলাপের পর মাকির্ন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নিড প্রিস বলেন, মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছেন।
প্রিস বলেন, মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের সাথে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দুই নেতা মানবাধিকারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার ও অভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে একমত হয়েছেন।
গত শুক্রবার মাকির্ন অর্থ ও পররাষ্ট্র দফতর র্যাব এবং পুলিশের বর্তমান আইজি বেনজির আহমেদসহ র্যাবের সাতজন বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর মানবাধিকার বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বেনজির আহমেদ পূর্বে র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পরের দিন শনিবার ঢাকায় নিযুক্ত মাকির্ন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তার দফতরে ডেকে নিয়ে এ ঘটনায় ঢাকার অসন্তোষ জানান।