বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » এসি মিলানকে ইউরোপ থেকে বিদায় করে লিভারপুলের শতভাগ জয়
এসি মিলানকে ইউরোপ থেকে বিদায় করে লিভারপুলের শতভাগ জয়
এসি মিলানকে ইউরোপীয়ান প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় করে দিয়েছে লিভারপুর। কাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ইতালিয়ান জায়ান্টদের ২-১ গোলে পরাজিত করে গ্রুপ পর্বে ৬ ম্যাচে ষষ্ঠ জয় নিশ্চিত করেছে জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা।
গ্রুপের অপর দুই দল পোর্তো ও এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের সাথে লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে মিলানের জয় ভিন্ন বিকল্প পথ খোলা ছিল না। সান সিরোতে সে লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটাও দারুন হয়েছিল। ২৮ মিনিটে ফিকায়ো টোমোরির গোলে মিলান এগিয়ে যায়। কিন্তু এই গোলের আনন্দ খুব বেশীক্ষন স্থায়ী হয়নি। ৩৬ মিনিটে মিশরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহ লিভারপুলের হয়ে সমতা ফেরান। বিরতির পর ১০ মিনিটের মধ্যে ডিভোক ওরিগির গোলে রেডসের জয় নিশ্চিত হয়। এই জয়ে ৬ ম্যাচে সম্ভাব্য ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-বি’র শীর্ষ দল হিসেবে পরের রাউন্ডে উঠেছে ক্লপ শিষ্যরা। কোন ইংলিশ ক্লাব হিসেবে এটা লিভারপুলের একটি রেকর্ড।
ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘এটা সত্যিই ব্যতিক্রমী পারফরমেন্স। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা কখনই সহজ কাজ নয়।, ছেলেরা এর মাধ্যমে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাস নিয়েই পরের রাউন্ড খেলবে। নিজেদের সেরাটা তারা প্রমান করেছে। আজকের ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম ছিলনা। আমি মনে করি এটা অবিশ্বাস্য একটি বিষয়।’
সিরি-এ লিগের শীর্ষে থাকা মিলান কাল ইনজুরির কারনে রক্ষনভাগের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়সহ আক্রমনভাগে রাফায়েল লিও ও আন্তে রেবিচকে ছাড়াই মাঠে নেমেছিল। দিনের আরেক ম্যাচে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ৩-১ গোলে পোর্তোকে পরাজিত করে দ্বিতীয় দল হিসেবে এই গ্রুপ থেকে শেষ ১৬ নিশ্চিত করেছে। আর তৃতীয় স্থানে থাকা পোর্তোর থেকের এক পয়েন্ট পিছিয়ে তলানির দল হিসেবে ইউরোপীয়ান আসর থেকে বিদায় ঘটেছে মিলানের। এই পরাজয়ে ২০১৩ সালের পর থেকে প্রথমবারের মত এসি মিলান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে খেলতে ব্যর্থ হলো। এমনকি ইউরোপা লিগেও তাদের জায়গা হলোনা।
মিলানের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার আলেহান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি বলেছেন, ‘আমাদের এ সমস্ত হতাশা ও পরাজয়ের স্মৃতি পাশে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। কারন একটি দল হিসেবে উন্নতি করার বিকল্প নেই। আমাদের পরাজয়ের দিকে তাকালে দেখা যাবে সেখানে কোনটিই বড় ব্যবধানে হয়নি। সবগুলোই মাত্র এক গোলের ব্যবধানে হয়েছে। আজ আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দলের বিপক্ষে সমান তালে লড়াই করেছি। ইউরোপের সেরা দলগুলোর তুলনায় আমরা হয়তবা একধাপ পিছিয়ে আছি, এখানে পার্থক্যটা তত বড় নয়।’
গত দুই বছর ধরে স্টিফানো পিওলির দল নিজেদের পুনর্গঠন করেছে যা ঘরোয়া লিগেও দৃশ্যমান। কিন্তু ইউরোপীয়ান আসরে এবার তারা কোনভাবেই নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। গ্রুপ পর্বের প্রথম চার ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট পেয়ে অন্তত ইউরোপীয়ান আসরে টিকে থাকা যায়না। উল্ফসের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে কোনমতে ১-০ গোলের জয় পেয়েছিল লিভারপুল। সেই দলের থেকে বেশ কিছু পরিবর্তন করেই কাল মূল একাদশ সাজিয়েছিলেন ক্লপ। কিন্তু তারপরেও দুই দলের মধ্যে পার্থক্যটা শুরু থেকেই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। শুরু তেকেই লিভারপুলের দ্বিতীয় দলটির বিপক্ষে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয় মিলান। স্বাগতিক সমর্থকদের উদ্দীপনাও কাজে আসেনি। ৮ মিনিটে টোমোরির হেড সহজেই তালুবন্দী করেন এ্যালিসন বেকার। দুই মিনিট আগে নেকো উইলিয়ামসের শট রুখে দেন মিলান গোলরক্ষক মাইক মেইগনান। তবে ২৯ মিনিটে টোমোরির গোলে পুরো সান সিরো যেন প্রাণ ফিরে পায়। যদিও তাদের এই উচ্ছাস মাত্র ৬ মিনিট স্থায়ী ছিল। এ্যালেক্স অক্সালেড-চেম্বারলেইনের দুর্দান্ত পাসে সালাহ গোল করে লিভারপুলকে সমতায় ফেরান। মৌসুমে এটি সালাহর ২০তম গোল।
বিরতির পর ১০ মিনিটের মধ্যে সাদিও মানের শট থেকে ফিরতি বলে ওরিগি ব্যবধান দ্বিগুন করলে মিলানের সব আশা শেষ হয়ে যায়।