শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | নরসিংদি | শিরোনাম » গেমিং ল্যাপটপ কিনতে শিশু ইয়ামিনকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
গেমিং ল্যাপটপ কিনতে শিশু ইয়ামিনকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
নরসিংদীর রায়পুরার উত্তর বাখরনগরের শিশু ইয়ামিন মিয়া (৮) অপহরণ ও হত্যার মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, সিয়াম (১৮), রাসেল (১৭), রায়পুরার উত্তর বাখরনগরের মৃত আসাদ মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (২৪) ও একই গ্রামের মৃত রাজা মিয়ার ছেলে কাঞ্চন মিয়া (৫৪)। শনিবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, টিভিতে সিআইডি ও ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গেমিং ল্যাপটপ কেনার টাকার জন্য মূলত এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। অপহরণের দুইদিন আগে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সিয়াম (১৮) ও রাসেল (১৭) দুই বন্ধু গেমিং ল্যাপটপ কিনে ইউটিউবে গেম লোড করে টাকা উপার্জনের জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসী জামাল উদ্দিনের ছেলে শিশু ইয়ামিনকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৮ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের দিন উত্তর-বাখরনগর মধ্যপাড়ায় শিশু ইয়ামিনের বাড়ির।
পাশে একটি দোকানের সামনে থেকে সিয়াম ও রাসেল দুইজন খেলার ছলে ইয়ামিনকে অপহরণ করে। পরে তাকে সিয়ামের বাড়িতে নিয়ে মুখ, হাত, পা বেঁধে বস্তায় ভরে রেখে ইয়ামিনের মায়ের কাছে স্ক্রিপ্টেডবায়া অ্যাপস ব্যবহার করে ভিপিএন এর মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে অপহরণের দিন সন্ধ্যাবেলায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে সিয়াম এবং রাসেল ইয়ামিনকে হত্যা করে। হত্যার পর ইয়ামিনের লাশ গোয়ালঘরের ভেতরে বস্তাবন্দী করে রাখে। উক্ত ঘটনার ৪ দিন পর বস্তাবন্দি লাশ রাতের অন্ধকারে একটি ডোবার মধ্যে ফেলে আসে হত্যাকারীরা।
এর আগে শিশু ইয়ামিন অপহরণের ৩ দিন পর তার মা সামসুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে সন্দেহভাজন কয়েকজনের নামে রায়পুরা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এরপর শুক্রবার সকালে রায়পুরার উত্তর বাখরনগর এলাকায় একটি ডোবা থেকে ইয়ামিন (৮) এর লাশ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে নরসিংদী পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম এর নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল বাসারের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ তানভীর মোর্শেদ, কবির উদ্দিন, মো. সফিউদ্দিন ও রায়পুরা থানার সহকারী উপপরিদর্শক জহিরুল হক সাঁড়াশি অভিযানে নামে। অভিযানের পর শনিবার ভোরে উপজেলার উত্তর বাখরনগর থেকে আসামি সিয়াম উদ্দিনকে এবং পিরিজকান্দি থেকে আসামি রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত স্কচটেপ, বালিশ ও অপহরণের ঘটনায় ব্যবহৃত মোবাইল এবং সিম আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত সুজন মিয়া (২৪) ও কাঞ্চন মিয়া (৫৪) এর নাম স্বীকার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে এই দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।