শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিক্ষা ও প্রযুক্তি | শিরোনাম » বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিণত করে স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করেছেন : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিণত করে স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করেছেন : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, কিছু সংখ্যক রাজাকার, আলবদর এবং আলসামস ছাড়া বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত না হয়, সে-লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ তেইশ বছরে এটিকে একটি জনযুদ্ধে পরিণত করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ত্বরান্বিত করেছেন। তিনি বলেন,বাঙালি একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পেয়েছিলো, এটি বাঙালির সৌভাগ্য।’
আজ শনিবার রাজধানীর গুলিস্থানস্থ জিপিও মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তিনজনকে সম্মাননা প্রদান উপলক্ষ্যে ফিলাটেলিস্টস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পিএবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এই অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) ও মাসরুর -উল হক সিদ্দিকীকে (বীর উত্তম) সম্মাননা প্রদান করা হয়।
পিএবি’র সভাপতি হাবিবুল আলম (বীরপ্রতীক) অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার, স্বাধীনতা সংগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশ গ্রহণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন,‘আমরা যারা যুদ্ধে গিয়েছিলাম তারা ফিরে আসার জন্য যাইনি।’
মুক্তিযোদ্ধারা দেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বস্তুতপক্ষে ৭ মার্চের পর থেকেই যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিলো। মন্ত্রী বলেন, ‘চিহ্নিত কিছু স্বাধীনতা বিরোধী ছাড়া এদেশের জনগণ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে এবং তথ্য দিয়েছে’।
জনগণের সহযোগিতা ছাড়া যুদ্ধে টিকে থাকা সম্ভব ছিল না উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময় এ দেশে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। ১৯৮১ সাল থেকে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ বেয়ে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বিশেষ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান প্রদানের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তা বাস্তবায়ন শুরু হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে অভাবনীয় অগ্রগতির মাইলফলক স্থাপন করেছে। করোনাকালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারা সচল রাখতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী মুক্তিযুদ্ধকালিন ঢাকা শহরে ক্র্যাক প্লাটুনের একজন সদস্য হিসেবে রামপুরার উলুনে পাওয়ার স্টেশন জ্বালিয়ে, গ্যানিস ও ভোগে আক্রমণ করাসহ বিভিন্ন অপারেশনের লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘বাঙালি অন্ধকার থেকে আলোতে আসবে সে জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলাম। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী সময় এমনও সময় গেছে আমাদেরকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে।’
মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম এবং মাসরুর- উল সিদ্দিকীও এ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের লোমহর্ষক বিভিন্ন অভিযানের বর্ণণা দেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের কিছু চিহ্নিত রাজাকার, আলবদর ও আলশামস ছাড়া সমগ্র জনগোষ্ঠী যুদ্ধ করেছে। জনগণ মুক্তিযুদ্ধে কিভাবে সহায়তা করেছে তার বিবরণও তারা তুলে ধরেন।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিরাজউদ্দিন ফিলাটেলিক এসোসিয়েসনকে ডাক টিকেট আন্দোলন চলমান রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, ডাক ও টেলি যোগাযোগ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মুজিব শতবর্ষের শত ডাক টিকেটের উপহার প্রদান করা হয়। একই সাথে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী একটি স্মারক খাম-সীল ও পোস্টকার্ড অবমুক্ত করেন।
এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তিন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মুজিব শতবর্ষের শত ডাকটিকেটের এলবাম প্রদান করে সম্মানিত করেন।
এ উপলক্ষে একটি উদ্বোধনী খাম ও স্মারক ডাক টিকেটও অবমুক্ত করা হয়।