শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » আইন আদালত | ছবি গ্যালারী | রাজশাহী | শিরোনাম » ১৭শ বিচারক দিয়ে মামলাজট কমানো সম্ভব নয়, বিকল্প ভাবতে হবে
১৭শ বিচারক দিয়ে মামলাজট কমানো সম্ভব নয়, বিকল্প ভাবতে হবে
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেছেন, দেশের বিচার ব্যবস্থায় ৪০ লাখের বেশি মামলা পেন্ডিং আছে। কিন্তু সারাদেশে বিচারক আছেন মাত্র ১৬ থেকে ১৭শর মতো। এ অল্প সংখ্যক বিচারক দিয়ে এত মামলা কোনো দিন নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। তাই আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে। সেই বিকল্প পদ্ধতিই হতে পারে মেডিয়েশন। মেডিয়েশন পদ্ধতির ব্যাপক প্রয়োগই মামলাজট কমাতে পারে।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জ জজ কোর্ট মিলনায়তনে বিচারক ও প্যানেল মেডিয়েটরদের নিয়ে ৪০ ঘণ্টাব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস) এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তন করে ভিন্নধারার বিচার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। কম খরচে, স্বল্প সময়ে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। একমাত্র মেডিয়েশনের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। এ কারণে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিরোধ মীমাংসায় মেডিয়েশন পদ্ধতির প্রয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট থেকে মেডিয়েশন বিষয়ে গাইড লাইন প্রকাশ করা হয়েছে। মেডিয়েশনের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা হলে কোনো পক্ষ হারে না। উভয়পক্ষের মধ্যে উইন উইন সিচুয়েশন বিরাজ করে।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ এ বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট থেকে আমরা চেষ্টা করছি বিচার ব্যবস্থায় মেডিয়েশন নামে যে একটি ব্যবস্থা আছে তা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে। মেডিয়েশন সম্পর্কে বিচার প্রার্থীদের সচেতন করতে বিচারকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরবিট্রেশন ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে উল্লেখ করে বিচারপতি ইমান আলী বলেন, এক সময় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি হিসেবে আরবিট্রেশনের প্রয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অল্প সময়ে, কম খরচে বিরোধ মীমাংসায় আরবিট্রেশন ব্যর্থ হয়েছে। আরবিট্রেশন এখন ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে। আরবিট্রেশন যেখানে ব্যর্থ মেডিয়েশন সেখানে সফল। সাধারণ মানুষ যখন মেডিয়েশনের সৌন্দর্য জানতে পারবে, তখন সবাই মেডিয়েশনের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসায় উদ্বুদ্ধ হবে।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিসোর্স পারসন হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিমসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর পংকজ কুমার কুন্ডু। সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জের জেলা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম সালমা খাতুন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. তানবীর আহমেদ, বেগম সুপ্রিয়া রহমান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার নাদিরা সুলতানা, সিনিয়র সহকারী জজ বাদল কুমার চন্দ্র, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী জজ সাইমুন আল ইসলাম, নূর মোহাম্মদ ভূঁইয়া, বেগম লাভলী নাজনীনসহ ১৯ জন প্যানেল মেডিয়েটর প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন।