বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » ‘একক আধিপত্য’ ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি আইওআরএ
‘একক আধিপত্য’ ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি আইওআরএ
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোনো দেশের একক আধিপত্য দেখতে চায় না বাংলাদেশ। ঢাকার এ নীতি তোলা হয় ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) তিন দিনব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে। তবে এ ব্যাপারে সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশকে সমর্থন করার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু জানায়নি।
ঢাকার হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৩ দেশের জোট আইওআরএর ২১তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের সমাপনী দিনে বুধবার (১৭ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উঠে আসে।
আইওআরএর সম্মেলনে ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল চাই। আমরা এখানে কোনো দেশের একক আধিপত্য চাই না। অনেকগুলো দেশ একমত হয়েছে।’
ইন্দো-প্যাসিফিক তথা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আইওআরএর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একমত হওয়ার বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সচিব বলেন, ‘আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো কিছু হয়নি। আইওআরএর অনেকগুলো সদস্য আছে, একেক জনের একেক মতাদর্শ রয়েছে।’
আগামীতে এ ইস্যুতে আলোচনার সময় পাওয়া যাবে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘যেহেতু আমরা দুই বছরের জন্য দায়িত্ব পেয়েছি, হাতে সময় রয়েছে এটা নিয়ে আলোচনা করার। আগামী জুলাইতে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। আইওআরএর সে সময় বা আগামীতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারবে। আমাদের দিক থেকে কাজ চলছে। ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে কিছু কিছু দেশ তাদের ইনিশিয়েটিভ নিয়েছে, যেমন-ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র আছে।’
এ সম্মেলন ঢাকাকে কীভাবে উপকৃত করেছে তা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে আমরা একাধিক জিনিস অর্জন করতে পেরেছি। আইওআরএর মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। মিউচুয়াল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা উপকৃত হয়েছি।’
সম্মেলনে কোভিড-ইস্যুতে বেশ গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স) অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে চীন-ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করেছে সেটি উঠে এসেছে। আফ্রিকাতে টিকা যায়নি বিষয়টি জোরালোভাবে উঠে এসেছে। কোভিড নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছে সেটা থেকে আউটকাম ডকুমেন্ট তৈরি করা যাবে। সম্মেলনে আইওআরএর ঢাকা ডেভলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে অনেক প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হবে।’
আইওআরএর তিন দিনব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন সোমবার ঢাকায় শুরু হয়। সোম ও মঙ্গলবার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকের পরদিন আজ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি হয়। আইওআরএর এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির পদ গ্রহণ করে, যার মেয়াদ দুই বছর। এতে ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেয়েছে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গামিনী লক্ষণ পেইরিস। আর ইন্দোনেশিয়া পেয়েছে সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো ডায়লগ পার্টনার হয়েছে রাশিয়া।
সম্মেলন প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দুই বছরের জন্য আইওআরএর চেয়ার নির্বাচিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা হয়েছে ভাইস-চেয়ারম্যান, ইন্দোনেশিয়া সেক্রেটারি জেনারেল এবং রাশিয়া ডায়লগ পার্টনার। কোভিডের মধ্যে এ সম্মেলনে ১১ দেশের ১৫ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী যোগ দেন।’