শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিক্ষা ও প্রযুক্তি | শিরোনাম » প্রতিবন্দ্বীসহ পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
প্রতিবন্দ্বীসহ পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রতিবন্ধীসহ সমাজের পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এই জনগোষ্ঠীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় বিশ্ব সাদাছড়ি প্রতিরক্ষা দিবস উপলক্ষ্যে রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ভিজুয়ালি ইম্পেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাদাছড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে অন-লাইনে যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বন্ধুদের পথযাত্রা সহজ করতে সাদাছড়িকে ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পন্ন সাদা ছড়িতে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা ও উন্নয়ন কাজ দায়িত্বের সাথে সম্পাদন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, এ বিষয়ক সফটওয়্যার উন্নয়ন মোটেও কঠিন হবে না।
ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বাধুনিক ভার্সন ৫জি প্রযুক্তি যাতে প্রতিবন্ধীদের কাজে লাগে সে বিষয়ে প্রতিবন্ধীদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে ডিজিটাল বাংলা মূদ্রণ ও প্রকাশনার জনক মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রতিবন্ধীদের জীবনে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ আছে। এর মধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ক তিনি তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার উন্নয়নসহ তার অধীন ডাক অধিদপ্তর, বিটিসিএল, টেলিটকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যে ধরণের সহায়তার সুযোগ আছে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেবল প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্যই নয় সমাজের দুস্থ, অসহায় পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল।দেশের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর পর তার মতো অন্য আরেকজন ছিলেন না যিনি সমাজের অধিকার বঞ্চিত অবহেলিত মানুষের জন্য গভীর মমতায় পাশে দাঁড়িয়েছেন। ডিজিটাল বাংলা মূদ্রণ ও প্রকাশনার জনক মোস্তাফা জব্বার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল সফটওয়্যার উন্নয়নে তার গৃহীত প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবন্ধীদের সমস্যা নিয়ে যুক্ত থেকেছি। এরই ধারাবাহিকতায় ব্রেইল সিস্টেম করার জন্য বাংলাদেশের মূদ্রণ ও প্রকাশনায় প্রতিবন্ধীদের সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলাম ।
ডাক অধিদপ্তরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পৃথক কিছু সুবিধা বিষয়ক দাবির উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের দাবি গুলো দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পোস্ট অফিসে যে টুকু করণীয় আছে তা আগামীকাল থেকেই সমাধানের কাজ শুরু করা হবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীগণ বাংলা ইউনিকোড ব্যবহার করেন কীনা তা জানালে এই ক্ষেত্রেও যা কিছু করণীয় তা করা হবে বলে আশ্বাস ব্যক্ত করেন ইউনিকোড কনসোরটিয়ামে বাংলার সঠিক বর্ণমালা প্রয়োগের বিষয়টি বাস্তবায়নের পথিকৃৎ মোস্তাফা জব্বার।
শিশু শিক্ষাকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করার আশ্বাস ব্যক্ত করে শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত যত বই আছে তা সফটওয়্যারে রূপান্তর করেছি।
এটি প্রতিবন্ধীদের উপযোগী করতে যা যা করণীয় তাই করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমি অতীতে আপনাদের সাথে ছিলাম, বর্তমানেও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে সাদা ছড়ি ব্যবহারকারীদের মুক্ত চলাচল নিশ্চিত করতে ১৫টি সুপারিশ পেশ করা হয়। এর মধ্যে দেশিয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উন্নত মানের সাদাছড়ি তৈরি, নাম মাত্র মূল্যে সাদাছড়ি ব্যবহারকারীদের মধ্যে তা বিতরণ, সাদাছড়ি ব্যবহারে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের উৎসাহিত করতে এবং এর ব্যবহার কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমারত, রাস্তা,ফুটপাত, রেলওয়ে প্লাটফর্মসহ পাবলিক প্লেস দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের উপযোগী করে তৈরি করা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই ও অন্যান্য মূদ্রণ ডাক মাশুল মুক্ত প্রেরণ করার সরকারি নির্দেশ সম্পর্কে ডাক অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের অবহিত করা, ডাকঘর সঞ্চয়ে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ স্ক্রীম চালু, মোবাইল অপারেটরসমূহে প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মক্ষেত্রে শতকরা একভাগ কোটা চালু, পিএবিএক্স –এর উপযোগী টকিং সফটওয়্যারের ব্যবস্থা করা, এনড্রয়েড বিজয় কীবোর্ড প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহার উপযোগী করা, বিজয় শিশু শিক্ষা প্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর সফটওয়্যার উদ্ভাবন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ভিজুয়ালি ইম্পেয়ার্ড পিপলস সোসাইটির সভাপতি নাসরিন জাহান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মধ্যে সাদাছড়ি বিতরণ করা হয়।