বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | ঢাকা | ফরিদপুর | শিরোনাম » সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের এপিএস ফুয়াদ গ্রেপ্তার
সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের এপিএস ফুয়াদ গ্রেপ্তার
দুই হাজার কোটি টাকার পাচার মামলার আসামি ও সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের এপিএস (বহিষ্কৃত) এইচ এম ফুয়াদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাতে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়ি ভাঙচুর মামলার আসামি এই ফুয়াদ। তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরে ১২টিও বেশি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা পাচার ও আওয়ামী লীগ নেতা সুবলের বাড়িতে ভাঙচুর মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। এর আগে তাকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চালিয়েছিল।
সূত্র জানিয়েছে, জেলার নগরকান্দার উপজেলার বিলনালিয়া এলাকার স্বাধীনতাবিরোধী মোজদার চোকদারের ছেলে এই ফুয়াদ। কলেজ পড়াকালীন সময়ে তার ফরিদপুরে আগমন ঘটে। এসেই বিরোধীপন্থি দুই নেতার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে রাজনীতি শুরু করেন। শুরু করেন বাড়ি বাড়ি প্রাইভেট পড়ানো। ওই সময়েই তিনি আওয়ামী লীগের খাতায় নাম লেখান। পরে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি দায়িত্ব পান তৎকালীন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর পিও পদে।
এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জিকে পদ থেকে সড়িয়ে সেই পদ তিনি বাগিয়ে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন ফরিদপুরের একচ্ছত্র অধিপতি।
একের পর এক ফরিদপুরের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে জামায়াত, বিএনপি ও ক্যাডার বাহিনীর সদস্যদের দলে নিয়ে রাজনীতির পাক্কা
খেলোয়াড় হয়ে উঠেন। একই সঙ্গে ফরিদপুরের শুধু এলজিইডি ছাড়া সব অফিস তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর এপিএস হওয়ার সুবাদে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ দেশের জেলার সকল অফিসগুলোতে চলে তার তদবির রাজত্ব।
নিজ জেলায় তার সঙ্গী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শহর আওয়ামী লীগ নেতা লেভী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইন, হাইব্রিড নেতা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন সন্টু। এ ফুয়াদ চক্রটির হাতে ক্ষমতা থাকায় তারা দিনকে রাত আর রাতকে দিন করতে থাকেন।
এমন কোনো অপকর্ম নেই যা এই চক্রটি করেনি। কথিত আছে, বিগত ১০ বছরে ফরিদপুরে বিএনপির নেতারা যতটা নির্যাতনের শিকার না হয়েছেন, তার চেয়ে বেশি নির্যাতন, হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা তার হাতে। হেলমেট বাহিনী’ গঠন করে দলের ত্যাগী ও সরব নেতাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। প্রবীণ নেতাদের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত আর অপমান করা হয়।
আওয়ামী লীগ আমলেই অনেক নেতাকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন থেকে। সেখানে বসানো হয় নব্য হাইব্রিডদের। অপমান এবং লাঞ্ছিত হয়ে ফরিদপুর থেকে ঢাকায় চলে যেতে বাধ্য হন কেউ কেউ। অনেকেই আবার রাজনীতি থেকে নীরবে বিদায় নেন। আর এই মহা সুযোগে তিনি সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের প্রশ্রয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নামে বেনামে ফরিদপুরসহ সারা দেশে। তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরে রয়েছে মানি লন্ডারিংসহ একাধিক মামলা।