শনিবার, ৯ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » আরজে নিরবের যে পরামর্শে আটকে রাখা হয় গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা
আরজে নিরবের যে পরামর্শে আটকে রাখা হয় গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা
পল্টন থানার একটি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় কিউকমের সিইও রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রিপন মিয়ার পর এবার প্রতিষ্ঠানটির হেড অব সেলস (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) অফিসার হুয়ামূন কবির নিরবকে (আরজে নিরব) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কিউকমের প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড হুমায়ূন কবির নিরব ওরফে আরজে নিরব। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল মাধ্যমে কিউকম সম্পর্কে প্রচারণা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতেন। আর তার কথায় বিশ্বাস করে সাধারণ মানুষ লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পথে বসেছেন। তিনি কিউকমের প্রতারণার মূলহোতা। তার পরামর্শে কিউকমের প্রধান নির্বাহী মো. রিপন মিয়া প্রতারণা করে গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা আটকে রেখেছেন। গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আরজে নিরব তারকা হিসেবে নিজের নাম ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিউকমের বিভিন্ন অফার ও স্কিমের বিষয়ে প্রচারণা চালাতেন। তার এই প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে গ্রাহকরা লাখ লাখ টাকার পণ্যের অর্ডার দিয়েছেন কিউকমে। এখন প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো তাদের টাকা আটকে রেখেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আরজে নিরব পরিচিত মুখ হওয়া ফেসবুকে তার বিশাল ফ্যান-ফলোয়ার রয়েছে। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিউকম নিয়ে নানান প্রচারণা চালাতেন নিরব। গত ২৪ আগস্ট কিউকম নিয়ে একটি নিউজ শেয়ার দেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘পুরো দেশ আর সারা দুনিয়া জুড়ে কিউকম ছড়াতে চাই, ইনশাআল্লাহ। আট বিভাগে নিজস্ব ডেলিভারি পয়েন্ট, ওয়ারহাউজ, কাস্টমার কেয়ার চালু করবে কিউকম’। এ ছাড়াও নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এমন অনেক স্ট্যাটাস আর নিউজ শেয়ারের মাধ্যমে কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন আরজে নিরব।
এমনকি কিউকমের প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসার পরও গত ২২ সেপ্টেম্বর নিরব তার ফেসবুকে লেখেন, মনে হয় এই শিল্পটা বন্ধ না করে কেউ থামবে না। একজন সৎ কর্মচারী হিসেবে বিপদের দিনে মালিকের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছিলাম, যেন গ্রাহক তার টাকাটা ফেরত পায়। সঠিক ভাবে গুছিয়ে কাজ করতে পারলে হয়তো তা সম্ভবও। কিন্তু মনে হচ্ছে, আপনারা পণ করে বসেছেন চাকরিটা না ছাড়া পর্যন্ত আমার পিছু ছাড়বেন না! তবে তাই হোক!
শুধু তাই নয়, কিউকমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা যোগাযোগের চেষ্টা করায় সাংবাদিকদের তাচ্ছিল্য করে গত ২১ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন নিরব।
নিরবের কথায় বিশ্বাস করে লাখ লাখ টাকার পণ্য অর্ডার দিয়েছিল গ্রাহকরা। কিন্তু সেই গ্রাহকরা এখন ঠকেছেন। তাদের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আটকে আছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের কাছে।