বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » আরব বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পেল তিউনিশিয়া
আরব বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পেল তিউনিশিয়া
আরব বিশ্বের এবং তিউনিশিয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারের সামান্য অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন ভূতাত্ত্বিকের নাম ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইয়েদ। রাজনৈতিক টানাপড়েন ও অচলাবস্থার জেরে আগের সরকার বহিষ্কার এবং বিস্তৃত নির্বাহী ক্ষমতা নিজের দখলে নেওয়ার দুই মাস পর প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ভূতাত্ত্বিক নাজলা বাউডেন রমধানকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্টের দফতরের প্রকাশিত একটি ভিডিও অনুযায়ী, বুধবার প্রধানমন্ত্রী রমধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ। ভিডিওতে তিনি বলেছেন, তিউনিসিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও নারী সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এটি তিউনিসিয়া এবং তিউনিসিয়ার নারীদের জন্য সম্মানের বিষয়।
তিউনিশিয়ার বেসরকারি রেডিও স্টেশন মোসাইক এফএম বলছে, ২০১১ সালে দেশটির উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছিলেন ৬৩ বছর বয়সী রমধান। তিনি এমন এক সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, যখন ২০১১ সালের আরব বসন্তের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক যে বিজয় অর্জিত হয়েছিল তা সংকটের মুখে পড়েছে এবং সরকারের আর্থিক খাত বড় ধরনের হুমকিতে রয়েছে। যদিও তিনি আসলে কতটা ক্ষমতার অধিকারী হবেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন আছে।
গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ দেশটির সরকার বহিষ্কার এবং মধ্যপন্থী ইসলামী দল এন্নাহদা পার্টি নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। বিরোধীরা তার এই পদক্ষেপকে অভ্যুত্থান বলে অভিহিত করেন। গত সপ্তাহে দেশটির সংবিধানের বেশিরভাগ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর সাইয়েদ বলেন, জরুরি অবস্থা চলাকালীন দেশ শাসনের আদেশ জারি এবং সরকার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে তার; যে সরকারের ক্ষমতার মেয়াদের কোনও সীমা নেই।
করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিউনিসিয়ার সরকার ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
গত জুলাই মাসে তিউনিশিয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ দখলে নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে দেশটির আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। যে কারণে বাজেট এবং ঋণ পরিশোধের জন্য নতুন সরকারকে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে; যা প্রধানমন্ত্রী নাজলা বাউডেন রমধানের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে হাজির হতে পারে।
তবে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ঘোষণা দিয়েছিলেন, সরকার দেশের প্রেসিডেন্টের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে এবং তিনি মন্ত্রিসভার মন্ত্রী নির্বাচন বা বরখাস্ত করতে পারবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা আগের প্রশাসনের তুলনায় কম হবে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি, অব্যাহত রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতার জেরে তিউনিশিয়ার জনসাধারণের মাঝে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সাইয়েদের ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে দেশটির শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেন।
বুধবার রমধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সাইয়েদ বলেন, আমরা দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলা চলছে তা শেষ করতে কাজ করব… আমরা অনেক সময় নষ্ট করেছি।
সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স।