রবিবার, ২২ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | বিনোদন | শিরোনাম » মদ কেনা-বেচাদের তালিকা, নির্মাতাসহ নাম আছে ৩০ জনের
মদ কেনা-বেচাদের তালিকা, নির্মাতাসহ নাম আছে ৩০ জনের
সম্প্রতি র্যাবের অভিযান গ্রেপ্তার হন প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। গ্রেপ্তারের পর মাদক, বিকৃত যৌনাচারে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জাম তার বাসা থেকে উদ্ধারের কথা জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জানা গেছে, অভিজাতপাড়ায় রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজের নেতৃত্বে চলত মাদকের রমরমা বাণিজ্য। বিদেশি মদ কিনে নিজস্ব লোকজনের মাধ্যমে তা সরবরাহও করতেন তিনি। এসব ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিদেশি মদ কেনাবেচায় জড়িতদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় চলচ্চিত্র পরিচালকসহ উঠে এসেছে প্রায় ৩০ জনের নাম। এদের মধ্যে রয়েছে প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ, মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসান এবং শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসানের নামও।
আরও পড়ুন…‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য দিয়েছেন পরীমণি, কারাগারে আটক রাখার আবেদন
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আব্দুস সবুর মণ্ডল বলেন, আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা হালনাগাদ করি। এবার বিশেষ করে বিনোদন জগতে মাদকের ব্যবসা, সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। শোবিজ জগতে কারা মাদক ব্যবসায় জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ৪ আগস্ট রাতে গ্রেপ্তারের পর প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকে মাদক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদকালেই ৮ আগস্ট রাতে রাজের বনানীর বাসায় তল্লাশি চালায় তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি দল। তল্লাশি অভিযানে একটি হ্যারিয়ার ও আরএভি-৪ মডেলের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়।
পরদিন (৯ আগস্ট) বিকেলে যোগাযোগ করা হলে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, পরীমণির বাসায় মদের সাপ্লায়ার ছিলেন রাজ। এছাড়া কথিত মডেলদের দিয়ে বিভিন্ন পার্টি এবং ইনডোর প্রোগ্রামের আড়ালে বিশিষ্টজন-ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্লাকমেইল ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর আমরা শোবিজ জগতে মাদকের ব্যবসায় জড়িতদের একটি তালিকা তৈরি করেছি। সে তালিকায় নতুন করে উঠে এসেছে একজন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালকের নামও। আমরা তদন্তের স্বার্থে তালিকায় থাকা সবার নাম প্রকাশ করছি না। পূর্ণাঙ্গ তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এর আগে প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানায়, রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজের শোবিজ জগতে ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০১৪ সালে। ২০১৪ সালের পর নাটক ও সিনেমা প্রযোজনা শুরু করেন। রাজ শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান এবং মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানের সহযোগিতায় ১০-১২ জনের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। তারা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টিতে মাদক সরবরাহ, মাদক সেবনসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করতেন। এ জন্য পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো বিপুল পরিমাণ অর্থ।
র্যাব সদর দপ্তরের র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজের অবৈধ আয়ের বড় অংশ হচ্ছে মাদকের ব্যবসা ও প্রতারণা থেকে। সে অর্থ নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায় আমদানি, বালু ভরাট, ঠিকাদারি ও শোবিজ জগতে বিনিয়োগ করেছেন। তার (রাজ) মাধ্যমেই একটি চক্র কাজ করছে বিনোদন জগতে। চক্রটি হোটেলে, অভিজাতপাড়ায় বিভিন্ন পার্টির আয়োজন করত। যেখানে মদের আসর বসত। আর রাজ নিজেই সেখানে মাদকের সরবরাহ করতেন। তার বাসায় বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার এটার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
রাজের বিরুদ্ধে দুই মামলা
রাজের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দের ঘটনায় মাদক আইনে এবং অশ্লীল ও পর্নোগ্রাফির বিভিন্ন ডিজিটাল কনটেন্ট পাওয়ায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করে র্যাব।
প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের দুর্গাপুরে। চলচ্চিত্র ও নাটক প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয় করেন তিনি।
জানা যায়, পরীমণির প্রথম ছবি ভালোবাসা সীমাহীন-এর প্রযোজক ছিলেন এই নজরুল ইসলাম রাজ। তিনি প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয়ও করে থাকেন। তার হাত ধরেই নাটক থেকে সিনেমায় নাম লেখান পরী।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন নজরুল রাজ। সূত্র: ঢাকা পোস্ট।