বাজেট উত্থাপন শুরু
সবঅস্থিরতা, সংশয়, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাকে সামনে রেখে উত্থাপিত হচ্ছে দেশের ৫১তম বাজেট। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বাজেট উত্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দেশের ৫১তম ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৩তম বাজেট উত্থাপন। এবারের বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেছে। বেলা ৩টায় অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। এর আগে এ বাজেটে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে দুপুর ১২টার কিছু পরে বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেয়।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামাল তার চতুর্থ বাজেট উত্থাপন করছেন। এমন সময়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট উত্থাপিত হচ্ছে যখন বিশ্ব করোনা পরবর্তী সংকট সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে, চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জাতিসংঘ খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছে, বিশ্বব্যাংক মন্দার ভয় দেখাচ্ছে, দেশে দেশে মুদ্রাস্ফীতি নতুন রেকর্ড গড়ছে, দেশীয় রেমিট্যান্স নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে শঙ্কা ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের দেখা দিয়েছে নাভিশ্বাস।
এসব চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে এবারের বাজেটের মূল কেন্দ্রবিন্দু সামাজিক সুরক্ষা বলয়কে আরও শক্তিশালী করা, মুদ্রাস্ফীতি সামাল দেয়া ও দেশজ সম্পন ও বিনিয়োগকে আরও বিস্তৃত করা।
এ লক্ষ্যে বুধবার (৮ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবারের বাজেটে প্রাধিকার পাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামের এবারের বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভুত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারনেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাসহ বেশ কিছু খাত।
বরাবরের মতো এবারের বাজেটও ঘাটতি বাজেট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
উত্থাপিত বাজেটে কর বাবদ আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। যেখানে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। বাজেটে সরকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থাকবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।