মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ইউক্রেন যুদ্ধের খেসারত দিচ্ছে আফ্রিকা ও এশিয়ার দরিদ্র মানুষ
ইউক্রেন যুদ্ধের খেসারত দিচ্ছে আফ্রিকা ও এশিয়ার দরিদ্র মানুষ
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট খাদ্য সংকটের খেসারত দিচ্ছে আফ্রিকা ও এশিয়ার দরিদ্র মানুষ। অন্যদিকে উন্নত দেশগুলো ধুঁকছে মূল্যস্ফীতিতে। মস্কোর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের সিদ্ধান্তে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল দেড়শ’ ডলারের ওপর চলে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার জেরে শুধু রাশিয়া নয়, টালমাটাল গোটাবিশ্ব। খবর বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা।
এ বছর বিশ্বে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হলেও ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর দেয়া পশ্চিমা অবরোধের কারণে বিশ্বজুড়ে তৈরি হয়েছে খাদ্য সংকট। ইউক্রেনেই আটকা পড়ে আছে প্রায় ৪০ কোটি মানুষের গম। পশ্চিমাদের অবরোধের কারণে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে বিশ্ববাজারে আসতে পারছে না এ খাদ্য।
রাশিয়া ও ইউক্রেন গম, ভুট্টা, সূর্যমুখী তেলসহ অন্যান্য খাদ্য শস্যের শীর্ষ রপ্তানিকারক। বিশ্বের গম রপ্তানির তিন ভাগের এক ভাগই এই দুটি দেশ করে। পাশাপাশি রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ রাসায়নিক সার সরবরাহকারী।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলবে বলে বিভিন্ন মহল থেকে হুঁশিয়ারি দেয়া হলেও তাতে কর্ণপাত করছে না পশ্চিমারা। তারওপর জ্বালানি রপ্তানির ওপর সর্বাত্মক আবরোধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাস ও জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশও মস্কো। নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ইতোমধ্যেই তেলের দাম চলে গেছে ১২০ ডলারের ওপর। নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হলে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল দেড়শ ডলারের ওপর চলে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তেলের এই দামের প্রভাবে বেড়ে যাবে খাদ্যের দামও।
রাশিয়ার বেশির ভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপ ও পশ্চিমা বিশ্ব। এ কারণে প্রচলিত ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে আমদানিকারক দেশগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে রাশিয়া থেকে তেল খাদ্য ও সার আমদানি। ফলে দুর্ভিক্ষের মধ্যে থাকা মানুষের খাদ্য সহায়তাও হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ২০২৩ সালে বিভিন্ন স্থানে দুর্ভিক্ষ তৈরির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে তারা।
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের অবরোধের প্রভাব পড়ছে খাদ্যশস্য উৎপাদনেও। পটাশ, অ্যামোনিয়া, ইউরিয়াসহ বিশ্বের রাসায়নিক সারের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। সারের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে কৃষি উৎপাদনে সংকট সৃষ্টি হবে।
গত এক বছরে বিশ্বে গমের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ, পামওয়েল ৫৬ শতাংশ, দুধ ৪০ শতাংশ এবং চালের দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। অন্যদিকে তেলের দাম বেড়েছে ৭২ শতাংশ , গ্যাস ১৮৭ শতাংশ ও কয়লার দাম বেড়েছে ২৩৯ শতাংশ।
ব্রিটেনের ভোক্তামূল্য সূচক এক বছরে বেড়েছে ৯ শতাংশ, জার্মানিতে প্রায় ৮ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে সাড়ে আট শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির কারণে সব দেশে দাম বেড়েছে প্রায় সব পণ্যের ।